আল - বাইক রেস্টুরেন্ট কি?
আল - বাইক রেস্টুরেন্ট এর শুরু হয় ১৯৭৪ সালে শাকুর আবু গাযালাহ এর হাত ধরে সৌদি আরবের বিখ্যাত শহর জেদ্দায়। মানসম্মত এবং সাশ্রয়ী খাবার প্রদানের উদ্যেশ্য নিয়েই এর যাত্রা শুরু। দ্রুত খাবার পরিবেশন এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাই এই প্রতিষ্ঠান এর প্রথম লক্ষ্য।
ছবিঃ আল বাইক রেস্টুরেন্ট এর আজিজিয়া শাখা সম্মুখভাগ এর ছবি, আল বাইকের অফিশিয়াল লোগো এবং সামনে পার্কিং অঞ্চল কে দেখানো হয়েছে।
কেন এত বিখ্যাত ?
কথিত আছে যে - “আপনি সৌদি আরব সফরে আসলেন আর আল বাইক খাওয়া হয় নি!
তাহলে আপনার এই সফরটাই বৃথা।”
আল - বাইক বর্তমানে সৌদি আরব তথা বিশ্বের সকল প্রান্তের মানুষের কাছে এর বিখ্যাত চিকেন ব্রোস্ট মিলের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। বর্তমানের এই চেইন টি সম্পুর্ন সৌদি আরব ছাড়িয়ে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যায় দেশ সমুহেও তার অপারেশন চালু করছে এবং ভারতীয় উপমহাদেশেও তাদের শাখা বর্ধিত করেছে।
ছবিঃ আল বাইকের একটি শাখায় খাবারের অর্ডার করার পর অর্ডার সার্ভিং কাউন্টারে অপেক্ষারত গ্রাহকরা।
বিশেষ করে সৌদি আরবে অবস্থিত জনগনের কাছে আল-বাইক খুবই জনপ্রিয় একটি খাবার। এর ভিন্ন ধরনের স্বাদ এবং সাশ্রয়ী মুল্যের কারনে এর জনপ্রিয়তা আরোও বেড়েছে। তাছাড়াও নিরাপদ খাবার এবং প্রত্যেক অঞ্চলে সহজলভ্যতার কারনে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের কাছে এটি খুবই জনপ্রিয়।
আমার দেখা তাদের কয়েকটি শাখা -
আমি একজন বাংলাদেশী হলেও বিগত ৫ বছর যাবৎ আমি সৌদি আরবে বসবাস করছি। সেই সুবাদের সৌদি আরবের বিখ্যাত জেদ্দা এবং পবিত্র মক্কা শহরের আল বাইকের অনেক শাখাতেই আমার যাওয়া হয়েছে এবং সেখানকার খাবার খাওয়ার সুযোগ হয়েছে।
ছবি ঃ আল বাইকের একটি শাখায় খাবার অর্ডার গ্রহন করছেন কাষ্টমার প্রতিনিধিরা । একজন গ্রাহক তার অনলাইন অর্ডারের বিস্তারিত নিচ্ছেন ।
এটি একটি বড় খাবার পরিবেশনা কোম্পানি হওয়ায় এর প্রত্যেকটা শাখাতেই একই ধরনের সাজসজ্জা এবং ইন্টরিয়র ডিজাইন দেখা যায়।
সৌদি আরবের আমার প্রথম আল বাইক এর অভিজ্ঞতা হয়েছিল মক্কা শহরের আল আজিজিয়া এলাকায় অবস্থিত শাখায়। এখানে আমি প্রথম তাদের বিখ্যাত চিকেন ব্রোস্ট মিল উপভোগ করেছিলাম। যা আমার ফ্রাইড চিকেন কিংবা চিকেন জাতীয় খাবারের অভিজ্ঞতাই পালটে দিয়েছিলো। তাদের এই চিকেন ব্রোস্ট আইটেমের স্বাদ,পরিমান এবং অন্যান সব বৈশিষ্ট্যর কারনে আর বাকিদের থেকে তাকে আলাদা করেছে। নির্দিষ্ট পরিমান মশলা এবং ফ্রাই করার অভিনব পদ্ধতির কারনে এর গুনগত মান অনেক ভালো। এবং একজন গড় হিসাবের মানুষের জন্য এই একটি মিলে ভাল পরিমান খাবার পরিবেশন করা হয়।
তাছাড়াও তাদের প্র্যতেকটা ব্রাঞ্চের খাদ্য নিরাপত্তা পলিসি এবং গ্রাহকের সর্বোচ্চ সন্তোষ্টির জন্য খুব কঠিন ভাবে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
কখন এবং কিভাবে যাবেন -
এর প্রত্যেকটা শাখাতেই অত্যন্ত মনোরম পরিবেশ বিরাজমান এবং সহজে এক্সেস নেয়া যায়।
একা অথবা পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে এখানে খুব সুন্দর ভাবে বসে খাবার উপভোগ করার সু ব্যাবস্থা রয়েছে।
তাছাড়াও হোম ডেলিভারি এবং কুইক টেইক আউট সিস্টেম সার্ভিস রয়েছে।
তবে উল্যেখ যে খুব জনপ্রিয় হওয়ার কারনে এই চেইনটির প্রত্যেকটা ব্রাঞ্চেই সবসময় ভীর থাকে তাই আমার পরামর্শ থাকবে হাতে অন্ততপক্ষে ১ ঘন্টা সময় নিয়ে যেতে হবে। যেহেতু এটি একটি ফাস্ট ফুড টাইপ খাবার পরিবেশনাকারী মাধ্যম সুতরাং দিনের যেকোন সময়েই আপনি যেতে পারেন তাদের অপারেশন টাইম মুলত শুরু হয় দুপুর ১ টা এবং শেষ হয় রাত ২ টায় এবং অঞ্চলভেদে এর ব্যাতিক্রম ও হয়ে থাকে।
সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নিজস্ব ব্যাবস্থাপনার একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে যার মাধ্যমে সহজেই পার্শ্ববর্তী যেকোন ব্রাঞ্চ থেকে হোম ডেলিভারি এবং অগ্রিম খাবারের অর্ডার প্লেস করা যায়। এবং প্রত্যেকটা ব্রাঞ্চেই অনলাইনে অর্ডারকৃত গ্রাহকদের জন্য অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন বা অন্যান্য সরকারি ছুটির দিনগুলোতে এই রেস্টুরেন্টে প্রচন্ড ভীর থাকে তাই ওই সময়ে হাতে পর্যাপ্ত সময় নয়ে যাওয়াই ভালো।
তাদের খাবারে তালিকা -
তাদের মুল আকর্ষণ চিকেন ব্রোস্ট থাকলেও তাদের তালিকায় অন্যান বহুরকম এর খাবার আইটেম রয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
১. চিকেন ব্রোস্ট
২. চিকেন নাগেটস
৩. চিকেন ফিলেট বার্গার
৪. চিকেন ফিলেট সেন্ডুইচ
৫. সি ফুডস - ফিস নাগেট, ফিস ফিলেট বার্গার, ফিস ফিলেট সেন্ডুইচ এবং শ্রিম্প নাগেটস।
৬. মিষ্টি এবং আইসক্রিম
৭. কোমল পানীয়।