শীতের গোলাপ রাজ্য

ফুল পছন্দ করে না এমন মানুষ মনে হয় খুব কমই পাওয়া যাবে। আর সেটা যদি হয় ফুলের রানী গোলাপ ফুল তাহলে তো অন্য রকম অনুভূতি কাজ করে। আমাদের দেশে অনেক ফুলই আছে তাঁর মধ্যে গোলাপ ফুল অন্যতম এবং বেশ পরিচিত। এই ফুল চিনে না এমন একজনও পাওয়া যাবে না, সেটা হোক দেশে বা দেশের বাইরে। এর জন্যই হয়তো গোলাপকে ফুলের রানী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সকল ধরনের শুভ কাজ, শুভেচ্ছা বিনিময়, কাউকে স্বাগত জানানো বা বিভিন্ন বড় ধরনের অনুষ্ঠানে আর কোন ফুল দেখেন বা না দেখেন গোলাপ ফুলের আধিপত্য সর্বস্তরে থাকবেই।

পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই, কোনো না কোনো ধরনের গোলাপ প্রায় সারা বছর ধরেই পাওয়া যায়। আর গোলাপের রয়েছে অসংখ্য প্রজাতি- কিছু প্রকৃতির তৈরি, আর কিছু নার্সারিতে বছরের পর বছর ধরে গবেষণার মাধ্যমে মানুষের দ্বারা কৃতিমভাবে তৈরি। আমাদের দেশে এমন এক গোলাপ গ্রাম রয়েছে যেখানে গেলে আপনি প্রায় সব ধরনের গোলাপ ফুল পাবেন। শুধু গোলাপ ফুলই নয়, গোলাপের পাশাপাশি অন্যান্য ফুলও পাবেন। তবে এই গ্রামটি গোলাপের জন্য বেশি পরিচিত।
ঢাকার খুব কাছেই বিরুলিয়া ইউনিয়নে তুরাগ নদীর তীরে সাদুল্লাহপুরে এই রাজ্যের অবস্থান। এই রাজ্য সবার কাছে গোলাপ গ্রাম নামেই পরিচিত। তাছাড়া ও গোলাপ গ্রাম নামের এই রাজ্য বন্ধু বা প্রিয় মানুষজনদের সাথে এক বিকেল সময় কাটানোর জন্যও বেশ জনপ্রিয়। দূরদূরান্ত থেকে এই গ্রামে আসে মানুষ। গোলাপ গ্রামে যাওয়ার সেরা সময়টি হচ্ছে এখন, মানে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাস। গোলাপ সারা বছরই পাওয়া যায় তবে গোলাপ বাগান সতেজতা ফিরে পায় শীতে। গ্রামে ঢুকতেই দেখতে পাবেন আঁকা-বাঁকা সুরু পথ। পথের ধার ঘেঁষে অসংখ্য গোলাপের বাগান। যত দূর চোখ যায়, শুধু লাল গোলাপের সমারোহ। গোলাপের সুগন্ধ আর চোখ জুড়ানো দৃশ্য নিয়ে পুরো গ্রাম সেজে আছে। শুধু সাদুল্লাহপুর নয়, আশপাশের শ্যামপুর, কমলাপুর, বাগ্মীবাড়ি গ্রামের গোলাপের রাজ্যে চোখ আটকে যাবে যে কারও। টকটকে লাল গোলাপ মাথা উঁচিয়ে থাকে। দুপুরের পরেই চাষিরা নেমে যান বাগানে ফুল তুলতে। বাগানের এক সারি থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত মুঠো ভরে ফুল তুলেন। ফুল তোলার দৃশ্যও বেশ উপভোগ্য।

একজন ফুল বিক্রেতার বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ শেষে তোলা ছবি।

গোলাপ বাগানের তোলা একটি ছবি।

গোলাপ বাগানে পাশেই রয়েছে ফুল বিক্রির দোকান সেখানে তোলা একটি ছবি।

ফুলের দোকানে তোলা হরেক রকমের ফুলে আরেকটি ছবি।

লোকে মুখে শুনেছি এখানে প্রথম গোলাপ চাষ শুরু হয় ১৯৯০ সালে। কয়েকজন যুবক এ গোলাপ চাষ শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে ভাল ফলন ও ভাল মুনাফা হওয়ায় এখন সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, মোস্তাপাড়া গ্রামের মানুষ গোলাপ চাষ করে অনেকেই স্বনির্ভর। সাদুল্লাহপুর গ্রামের মানুষ কম সময়ে বেশি মুনাফার আশায় মূল পেশা পরিবর্তন করে, তারা কৃষিকাজ ছেড়ে সবাই এখন গোলাপ চাষে ব্যস্ত। এখন এ অঞ্চলের প্রায় বেশির ভাগ বাসিন্দা গোলাপ চাষের সঙ্গে জড়িত।

19 Likes

বাহ্ দারুন।‌‌‌ ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

2 Likes

আফসোস এখনো যাওয়া হয়নি @Saiful-Islam-Alif ধন্যবাদ ভাই ভালো লাগলো।

2 Likes