আমি নিজে ঢাকার চিড়িয়াখানায় অনেক বার গিয়েছি। তখন আমি নিজে ছোট ছিলাম। মা-বাবা, দাদা-দাদী, চাচা-ফুপুর হাত ধরে প্রথম যাওয়া। তারপর আরো অনেকবারই যাওয়া হয়েছিল আগে।
এখন আমি বড় হয়ে গিয়েছি। আমার একটা ছোট্ট ছেলেও আছে, শায়ান! ওর বয়স ২ বছর ৯ মাস। তার পশু-পাখির উপর একটু বেশিই আগ্রহ। এ আগ্রহকে আরো প্রাণ দিতে তাকে নিয়ে কিছুদিন আগে ঘুরে এলাম চিড়িয়াখানা থেকে। আর আমি যেহেতু লোকাল গাইড হিসেবে ম্যাপে কন্ট্রিবিউট করি। এজন্যেই কোথাও ঘুরতে গেলে আমার চোখ এদিক, ওদিক চলে যায় তথ্য অনুসন্ধানের জন্য। ম্যাপে কোন তথ্যটি আপডেটেড নেই, সেই সব খুজে বেড়াই ঘুরাঘুরির সাথে সাথে।
প্রথমেই ইতিহাস দিয়ে শুরু করা যাক-
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা (ইংরেজি: Bangladesh National Zoo**) :** বাংলাদেশের জাতীয় চিড়িয়াখানা ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত । এটি বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ একটি প্রতিষ্ঠান। প্রথম ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তুর প্রদর্শনশালা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় চিড়িয়াখানাটি। পরবর্তীকালে ১৯৭৪ সালে ঢাকার মিরপুরে স্থানান্তরিত হয় এটি। চিড়িয়াখানাটি উদ্বোধন ও সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন। বছরে প্রায় ৩০ লক্ষ দর্শনার্থী ঢাকা চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে থাকেন।পরবর্তীতে ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি নাম পরিবর্তন করে “ঢাকা চিড়িয়াখানা” থেকে “বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা” নামকরণ করা হয়।
ঢাকা চিড়িয়াখানার আয়তন প্রায় ৭৫ হেক্টর। চিড়িয়াখানার চত্বরে ১৩ হেক্টরের দুটি লেক আছে।
চিড়িয়াখানা তথ্যকেন্দ্র হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৯১ প্রজাতির ২১৫০টি প্রাণী রয়েছে। তবে অন্য তথ্য অনুযায়ী বর্তামনে ঢাকা চিড়িয়াখানায় ১৩৮ প্রজাতির ২ হাজার ৬২২টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে বলে জানা যায়।
এবার ঘুরতে গিয়ে যে জিনিসটা বেশি ভালো লেগেছে, তা হলো আগের তুলনায় অনেক বেশি অর্গানাইজড মনে হয়েছে। তাছাড়া, পশু-পাখিগুলোকেও বেশ ভালো যত্ন-আত্তি করা হচ্ছে বলেও মনে হল।
আমার ছেলের খুশির সীমা ছিল না ঐদিন। অবশ্য, এইটাও একটা কারণ আমার সবকিছু ভালো লাগার।
এবার আসি কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়েঃ
নামঃ বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা (ইংরেজি: Bangladesh National Zoo)
ঠিকানাঃ মিরপুর চিড়িয়াখানা রোড, মিরপুর ১, ঢাকা।
বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা পরিদর্শনের সময়কালঃ
গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল অক্টোবর): সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৬ টা ।
শীতকালীন মৌসুমে (নভেম্বর-মার্চ): সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা ।
*** প্রতি রবিবার চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকে। তবে, সরকারি ছুটির দিনগুলোতে খোলা থাকে।
টিকেট মূল্য-
- প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা।
- ০ থেকে ২ বৎসরের বাচ্চাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে টিকেট ফ্রি
*** ভিতরের Zoo Musuem-এর প্রবেশ ফি- ৫ টাকা।
এছাড়াও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বরাবর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আবেদন করলে শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরে ৫০% থেকে ১০০% পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয় এবং এতিম ও মানসিক, শারিরীক প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০০% পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়।
কিউরেটর-এর নামঃ জনাব এস এম নজরুল ইসলাম
ফোন নং : +৮৮ ০২ ৫৮০৫৩০৩০ ।
আশা করি, তথ্যগুলো সবার প্রয়োজনে আসবে।
অবশ্যই, পরিবারের ছোট্ট সদস্যকে নিয়ে একবার হলেও ঘুরে আসবেন। ছোট্ট সদস্যটির জীবনভর এ অভিজ্ঞতা মনে রাখবে, এইটা আমি জোরের সাথে বলতে পারি। সাথে যে খুশিটা হবে, সেই খুশি দেখলে আপনার নিজেরও মনটা ভরে যাবে!