ঢাকার মধ্যে যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে ঘুরে আসতে পারেন ঠিকানা ডে আউটারস্ রিসোর্টে।
কোথায় অবস্থিত: এই রিসোর্টটি বাড্ডা থানার বেরাইদ এলাকায় বালু নদীর তীরে অবস্থিত।
কিভাবে যাবেন: বাড্ডা নতুন বাজার ভাটারা থানার এখানে এসে রিক্সা কিংবা স্থানীয় টেম্পু কিংবা সিএনজিতে চলে যেতে পারেন ঠিকানা ডে আউটারস্ রিসোর্টে।
যাদের নিজস্ব গাড়ি আছে তারা সবচেয়ে সহজে চলে যেতে পারবেন রিসোর্টটিতে।
এন্ট্রি ফি কেমন: ঠিকানা ডে রিসোর্টে এন্ট্রি ফি জনপ্রতি ৩০০ টাকা। ওদের আরো একটি অপশন আছে আপনি যদি ওদের মেনু থেকে খাবার অর্ডার করেন সেক্ষেত্রে আলাদাভাবে কোন এন্ট্রি ফি দিতে হবে না খাবার অর্ডার করলে এন্ট্রি ফি ফ্রি। সেক্ষেত্রে আপনি রিসোর্টে প্রবেশ করেই যেখান থেকে এন্ট্রি টিকিট কাটা হয় সেখানে খাবার মেনু দেখে খাবার সিলেক্ট করে খাবার টোকেন সংগ্রহ করে নিতে পারবেন এবং পরবর্তীতে আপনার সুবিধামতো যে কোন সময় টোকেনটি জমা দিয়ে খাবারটি সংগ্রহ করতে পারবেন।
অর্ডার করার ২০ মিনিটের মধ্যে খাবার সরবরাহ করা হয়।
খাবারের দাম কেমন: ঠিকানা ডে আউটারস ওদের ফেইসবুক পেজে গেলে আপনি মেনু থেকে ওদের খাবারের দামগুলো জানতে পারবেন। সর্বনিম্ন ১৩০০ টাকা থেকে ওদের খাবার প্যাকেজ শুরু দুজনের জন্য। এছাড়াও কফি ও স্নেকস্ অ্যাভেইলেবল পাবেন।
পরিবেশ কেমন: ঠিকানা ডে আউটারস্ রিসোর্টটি যথেষ্ট পরিপাটি এবং খোলামেলা একটি রিসোর্ট। পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঢাকার মধ্যে যারা দু থেকে তিন ঘন্টা সময় কাটাতে চান তারা এই রিসোর্টে ঘুরে আসতে পারেন। বেশিরভাগ সময় দেখা যায় সময়ের অভাবে আমরা ঢাকার বাইরে যেতে পারি না সেক্ষেত্রে ঢাকার মধ্যে এই রিসোর্ট টি একটি ভালো অপশন হতে পারে।
কি কি সুবিধা পাবেন ঠিকানা ডে রিসোর্টে: পহেলা জানুয়ারি থেকে এই রিসোর্ট টে ফুলের মেলা শুরু হয়েছে যার জন্য জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসে গেলে আপনি যদি ফুল প্রেমী হন তাহলে রিসোর্টটি আপনার অনেক ভালো লাগবে। রিসোর্টের এন্ট্রি গেট থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত শুধু ফুলই ফুল।
এই রিসোর্টে বাচ্চাদের ছোট্ট একটি প্লেগ্রাউন্ড রয়েছে।
এই রিসোর্টে নামাজ পড়ার জন্য পুরুষ এবং মহিলাদের আলাদা ব্যবস্থা আছে।
বিশেষ দিবসগুলোতে এই রিসোর্টটি অন্যরকমভাবে সাজানো হয় যেমন একুশে ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে আমি দেখেছি সম্পূর্ণ রিসোর্টটি বর্ণমালা দিয়ে সাজানো। রিসোর্টের দেয়ালে ফুল দিয়ে শহীদ মিনারের ডিজাইন করা হয়েছে। বর্তমান জেনারেশনের জন্য ভাষার প্রতি সম্মান এবং এই দিনগুলো সম্পর্কে খুব সহজেই জানানো যায় এই ধরনের ডেকোরেশন দেখে।
এছাড়াও এই রিসোর্টে বুকিং দেয়ার মাধ্যমে মাটির চুলায় রান্না এবং পিকনিকের ব্যবস্থা রয়েছে তবে অবশ্যই অগ্রিম বুকিং দিতে হবে।
এই রিসোর্টে গিয়ে যেসকল সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন:
রিসোর্ট টি ঢাকার মধ্যে হলেও বেরাইদ এলাকার একবারে শেষ প্রান্তে অবস্থিত যার কারণে রিসোর্ট থেকে বের হলেই সিএনজি কিংবা বাস পাবেন না, বেশিরভাগ সময় রিসোর্ট থেকে বের হয়ে বেরাইদ বাজার পর্যন্ত হেঁটে আসতে হয় ।সেখান থেকে রিক্সা কিংবা লোকাল টেম্পুতে নতুন বাজার এসে আপনি বাস কিংবা সিএনজি নিতে পারবেন। বাচ্চা কিংবা বয়স্কদের সাথে নিয়ে গেলে যাতায়াতের সমস্যাটা আপনাকে বিরক্ত করতে পারে।
এছাড়াও আরও একটি নেগেটিভ দিক হচ্ছে এই রিসোর্ট টি একদমই বাজেট ফ্রেন্ডলি নয় যারা একটু কম খরচে বাজেটের মধ্যে ঘুরতে চান এই রিসোর্ট টি তাদের জন্য নয়।
এখানে খাবারের মূল্য অত্যাধিক এবং খাবারের মানও খুব বেশি ভালো নয়। বাইরের কোন খাবার রিসোর্টে এলাও করে না তাই কিছু খেতে চাইলে রিসোর্টে অর্ডার করা ছাড়া আর কোন অপশন নেই। এছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এই রিসোর্টে অত্যাধিক মশা। মশা নিধনের তাদের কোন পদক্ষেপ আমার চোখে পড়েনি তাই কর্তৃপক্ষের উচিত অবশ্যই এই সমস্যাটির সমাধান করা।
এই রিসোর্টে ব্যক্তিগত পোষ্য প্রাণী নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই পোষ্য প্রাণী নিয়ে রিসোর্টে যাবার সিদ্ধান্ত নিবেন না অন্যথায় বিপদে পড়তে হবে।
আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এই পোস্টটি লিখেছি।এই রিসোর্টের পরিচালনার সাথে আমি কোনোভাবে জড়িত নই। একজন ভিজিটর হিসেবে আমি যা অভিজ্ঞতা পেয়েছি সেখান থেকে এ পোস্টটি আমি করেছি।






