`হাওয়াই মিঠাই’ যতটা না মিস্টি, এর সাথে জরিয়ে থাকা আমাদের ছোট বেলার স্মৃতিগুলো এর চেয়ে বেশি মিস্টি।
কোন ভরদুপুর বা সোনালী আলো ছড়ানো সিগ্ধ বিকাল। হঠাৎ একটা ঘন্টার শব্দ, আর আমাদের ছুটাছুটির শুরু। প্রথমেই হাঁক দিয়ে বলতাম “এই হাওয়াই মিঠাইওয়ালা দাঁড়ান, এখনেই আসতেছি”! তারপর মায়ের কাছে থেকে বাইনা ধরে বিভিন্ন ভাঙ্গা গৃ্হস্থালীয় জিনিস, জিনিস না থাকলে ২ টাকা, ৫ টাকা চেয়ে নিতাম। তার তা দিয়ে কিনে খেতাম হাওয়াই মিঠাই। আহ কি সুখ!
হাওয়াই মিঠাইওয়ালারা একটা বাঁশের পাতের এক পাশে একটা কাঁচ ও টিন দিয়ে বানানো বর্গাকৃতির বাক্সে গোলাপী রংয়ের গোল গোল হাওয়াই মিঠাই থাকতো, আরেক প্রান্তে একটা বড় ব্যাগ বা বস্তা ঝুলানো থাকতো। যেটাতে বিভিন্ন জিনিস পত্র রাখতো, যেগুলোর বিনিময়ে হাওয়াই মিঠাই দিতো। তাদের হাতে থাকতো একটি কাঁসার ঘন্টা, এই ঘন্টা বাজিয়ে বাজিয়েই রাস্তা দিয়ে যেত, বাচ্চাদের মনোযোগ আকর্ষণের জন্য।
এমন হাওয়াই মিঠাই বা এভাবে ফেরি করে হাওয়াই মিটাই বিক্রি করা এখন সচরাচর চোখে পড়েনা।
বিভিন্ন মেলায় বা রাস্তার পাশে একটা কাঠিতে বড় আকারের হাওয়াই মিঠাই পাওয়া যায়, যা হয়তো হাওয়াই মিঠাই এর স্বাদ মিটাই, কিন্তু এই আবেগের ছিটেফুটাও পূরণ হয়না।
হঠাৎ করে গতকাল আমাদের গ্রামে সেই ছোট বেলার মতো কাঁচের বাক্সে করে বিক্রি করা হাওয়াই মিঠাইওয়ালার দেখা পেলাম, ওনার থেকে হাওয়াই মিঠাইও কিনে খেলাম, কিন্তু ছোট বেলার সেই স্বাদ আর খুজে পেলাম না, হয়তো হাওয়াই মিঠাইয়ের স্বাদ সেই আগের মতোই আছে, কিন্তু পাল্টে গেছে আমাদের স্বাদ বাড়িয়ে দেয়া সেই আবেগ।