টিয়া পাখি নামটাই একটা ভালোবাসা। খুব ছোট বেলায় এই পাখির প্রতি দারুণ এক কৌতূহল কাজ করত কারণ এই পাখি নাকি মানুষের মত কথা বলতে পারে। মনে আছে আমার ছোট ফুপির বাসায় একটা টিয়া ছিল, খাঁচায় বন্দী করে পোষত তারা। ফুপির বাসায় বেড়াতে যাবার অন্যতম আকর্ষণ ছিল এই পাখি। তারপর এই পাখি নিয়ে যে কত আবেস ও কৌতূহল কাজ করছে তার কোন ইয়ত্তা নেই।
যখন থেকে বার্ডিং করি বা ক্যামেরায় পাখির ছবি তুলি তখন থেকেই দারুণ একটা আশা ছিল একদিন টিয়ার ছবি তুলবো। খাঁচায় বন্দী না, পাখা মেলে উড়ে বেড়ানো মুক্ত টিয়া পাখি। কিন্তু কই পাই আর তাকে। কোন ভাবেই টাইমিং হচ্ছিল না। অনেক জায়গায়, অনেক ফটোগ্রাফারের টিয়ার ছবি দেখে ভাবতাম কবে আমি নিজে তুলবো।
অবশেষে সেই দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান হল ২০২৪এ এসে। এর আগে এমন হয়েছে টিয়ার সাথে দেখা হয়েছে কিন্তু হাতে ক্যামেরা নাই। সব গুলোই কাকতালীয় দেখা। এ বছরের জানুয়ারির এক সকালে একটা প্রি-প্লান শ্যুট ছিল চন্দ্রিমা উদ্যানে। সেইখানে শ্যুট বাদ দিয়ে মডেলকে দাঁড় করিয়ে লেন্স চেঞ্জ করে ধুপ ধাপ তুলা শুরু করলাম।
তারপর হঠাৎ একদিন আমাদের সবার প্রিয় আসাফ ভাইয়ের ছবি দেখলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরে। দেখা মাত্রই খোঁজ খবর নেওয়ার চেষ্টা করলাম, এই বিষয়ে ছোট ভাই করিম পাকাপোক্ত তথ্য দিল। তারপর বেরিয়ে পরলাম একদিন মিশনে। আর এই তার রেজাল্ট।
বশেমুরকৃবি এর মাঠের ছোট ছোট বাগানের সূর্যমুখী ফুলে তারা তাদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে পুরো দমে। তবে আমার ডিভাইস সংকীর্ণতায় বেশ কষ্ট করে লুকিয়ে মাঠে কাটা যুক্ত ঘাসে হামাগুড়ি দিয়ে মনের বাসনা পূরণ করতে পারলাম, আলহামদুলিল্লাহ্।
আমি ছোটবেলা থেকেই পাখি প্রেমিক। স্কুলে পড়া অবস্থায় আমি অনেক গুলো পাখি ধরেছি সেই পাখিগুলো ঝড় বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আর বেশ কয়েকটি টিয়া পাখি আমি পোষ মানিয়েছিলাম। আমার নাম পর্যন্ত শিখেছিল, আমার নাম ও তার নাম মিঠু এরকম বেশ কয়েকটি নাম বলতে পারতো। আমার শিশের শব্দে উড়ে চলে আসতো আমার কাছে। আমি যেখানেই যেতাম সেখানেই পাখিগুলো নিয়ে যেতাম। তারপর থেকে যখন কর্মজীবনে পা রাখলাম, তখন থেকে আমি সেগুলো উন্মুক্ত করে দেই। কিন্তু তারপরেও পাখিগুলো আবার আমাদের বাড়িতে চলে আসতো।
তবে আর একটি মজার বিষয় হলো এই টিয়ে পাখির বাচ্চা গুলা দেখাশোনা করার জন্য আমি প্রতিদিন নারিকেল গাছে উঠতাম পাখিগুলোর বাচ্চা গুলো কতটুকু বড় হয়েছে দেখার জন্য।আর সেখান থেকেই আমি নারিকেল গাছে উঠা শিখেছিলাম।
ধন্যবাদ @MdRatul ভাই আপনার এত সুন্দর ফটোগ্রাফি ও অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য।