12-09-2020 07:09 AM
বগুড়ার স্বনামধন্য একটি প্রতিষ্ঠান হলো আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল যা আকবরিয়া নামে পরিচিত। ১০৯ বছর ধরে তারা বগুড়ার মানুষকে তৃপ্ত করছে তাদের কম দামের ভালো মানের খাবার দিয়ে। বগুড়া শহরের বেশির ভাগ মানুষেরই সকালটা শুরু হয় এখানকার পরোটা,সবজি,ডাল আর এক কাপ ধুয়ো উঠা চায়ের সাথে...বগুড়াতে একটা সময় মুসলিমদের হোটেল বলতে শুধুই ছিল আকবরিয়া, শত বছরের ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে বগুড়ার প্রাণকেন্দ্রে এখনও স্ব-গৌরবে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। যার জনপ্রিয়তা সর্ব-স্তরের মানুষের কাছে এতটুকুও ম্লান হয়নি।
সকালের জনপ্রিয় নাস্তা: পরোটা আর বুটের ডাল
আকবরিয়ার পরোটা সাইজে অন্য সব পরোটা থেকে খানিকটা বড় হয় । অন্য পরোটার মতো তেল চিটচিটে ভাবটা থাকেনা যেটার জন্য পেট ঘেটে উঠার যে একটা ব্যাপার থাকে সেটা হয়না। পরোটার মধ্যে সুন্দর একটা ঘ্রাণ পাওয়া যায়, পরোটাটা শক্ত থাকেনা আবার নরম ও না।
বুটের ডালঃ- বুটের ডালটা খুব ঘন তাদের, খুবই সুন্দর একটা ঘ্রাণ আপনার রুচি বাড়িয়ে দিবে বহুগুণে, আমার কাছে তাদের বুটের ডালটা সবসময়ই খুব বেশি ভালো লাগে। ভোক্তার সন্তুষ্টির বিষয়ে আকবরিয়া বদ্ধপরিকর।
এখন আপনাদের সামনে তুলে ধরে আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল এর শুরু থেকে এই পর্যন্ত চলমান মানবতার ইতিহাস।
১৯১১ সালে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আকবর আলি আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল এর ছোট্ট একটি হোটেল দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। সেদিন থেকে তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন প্রতিদিন সকল প্রকার গরীব-মিসকিনদের বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করার। তখন থেকে মুসাফির (অতিথি) ভিক্ষুক, ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করে আসছে শত বছর ধরে। এখানে প্রত্যেক রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে শহরে অবস্থানরত নাম-পরিচয়হীন এই মানুষদের একবেলা ভালোমানের খাবারের ব্যবস্থা করে।
১৯৭৫ সালে তিনি মৃত্যুর আগে তার ছেলেদের হোটেলের আয় থেকে মুসাফির, ফকির, মিসকিন ও গরিবদের খাওয়ানোর কথা বলে গেছেন। তাই সে কথার এতটুকু নড়চড় হয়নি আজো। বাবার শুরু করা নিয়ম মেনে তার ছেলেরা আজো তা পালন করে যাচ্ছেন। আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেলের এখন শহরেই চারটি শাখা। কবি নজরুল ইসলাম সড়কে আকবরিয়া গ্র্যান্ড হোটেল, ইয়াকুবিয়ার মোড়ে মিষ্টি মেলা, ডিসি অফিস চত্বরে অ্যাডমিন হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ও চারমাথা বাসটার্মিনালে রেস্টুরেন্ট সংযোজন করেছে। রয়েছে চাইনিজ, থাই ও ফাস্ট ফুড, লাচ্ছা-সেমাই, দই, মিষ্টি ও বিস্কুট। কর্মচারী রয়েছে দুই সহস্রাধিক। আকবর আলীর সেই লাচ্ছাসেমাই এখন বিদেশের বাজারেও বিক্রি হয়।
এই হোটেলের আয় দিয়ে বাবা প্রথম দ্বীনহীন মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেন। সেই থেকে আজ পর্যন্ত বাবার সেই নিয়ম পালন করছে তার সন্তানেরা। এই খাবার বিতরণের জন্য প্রতিদিন এক মণেরও বেশি চাল রান্না করা হয়। আলাদাভাবে রান্না করে খাবার বিতরণ করা হয়। রাত ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে হোটেলের সামনের রাস্তায় সে খাবার বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন শ’ অভাবী মানুষ একবেলা পেটভরে খাবার খান। মূলত খাবারটি বিতরণ শুরু হয়েছিল মুসাফিরদের জন্য।
পরিশেষে, আমরা আশাবাদী ভবিষ্যতেও তাদের নতুন প্রজন্ম এই দৃষ্টান্তমূলক মানবতার ধারা অব্যাহত রাখবে।
12-09-2020 08:30 AM
It's really a great and most interesting job!! 👍👍👍
12-09-2020 09:29 AM
সময় টা ছিলো ২০১১/১২ সাল। মোবাইল কোম্পানির কাজে বগুড়ায় ছিলাম প্রায় ২০/২২ দিন। আমার দেখা ভালো মানের একটি হোটেল। আমি নিয়মিত এক জন কাস্টমার ছিলাম। এক দিন রাত ৯:০০ টার সময়, দেখলাম বড় বড় ৭/৮ টা পাতিল হোটেল এর সামনে। এক জন কে জিজ্ঞাসা করাতে বললো এই গুলো গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য। আমি অবাক হলাম। ঐ হোটেল বয় আমাকে বললো, আমি সাত বছর বয়স থেকে এখানে, আমার বয়স এখন ৬০ বছর। ১০০ বছর দরে এই খাবার এর ব্যবস্থা।
ধন্যবাদ
ভাই একটি অসাধারন পোষ্ট।
12-09-2020 09:45 AM
অনুকরণীয় বিষয়।
12-09-2020 02:06 PM
Thanks @Sagir_Ahmmed for share this post with us.