03-11-2021 07:12 AM
গোয়াইনঘাট উপজেলার অন্তর্গত খাসিয়া-জৈন্তা পাহাড়ের সমতলে ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁষে সিলেট শহর থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে পিয়াইন নদীর অববাহিকায় অবস্থিত প্রকৃতির পাথর কন্যা জাফলং।
যা পূর্বে ছিল খাসিয়া জৈন্তা-রাজার অধীনে, ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে জমিদারী প্রথার বিলুপ্তির মধ্য দিয়ে খাসিয়া-জৈন্তা রাজ্যের অবসান ঘটে। ধীরে ধীরে পাথর ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকলে একসময় গড়ে ওঠে আজকের জাফলং।
আদমশুমারী অনুযায়ী এখানে বল্লা, সংগ্রামপুঞ্জি, নকশিয়াপুঞ্জি, লামাপুঞ্জি ও প্রতাপপুর জুড়ে রয়েছে ৫টি খাসিয়াপুঞ্জীতে ১,৯৫৩ জন খাসিয়া উপজাতি বাস করেন। এখানের মানুষের মূল জীবিকা পাথর উত্তোলন।
ভারতের আসাম রাজ্যের জৈন্তিয়া পাহাড় হতে উৎপত্তি হয়ে উমগট নদী দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়ে ছাতকের উত্তরে শনগ্রাম সীমান্তের কাছে সুরমা নদীতে মিশেছে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে এই উমগট নদী প্রবেশ পথেই দুই ভাগে বিভক্ত হয়েছে। প্রধান শাখাটি পিয়াইন নদী এবং অপর শাখাটি ডাউকি নামে পরিচিত।
পিয়াইন নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৫ কিলোমিটার যার জাফলং থেকে ছাতক পর্যন্ত ৮০ কিলোমিটার পথে এর ২২টি বাঁক আছে। এটি সুনামগঞ্জ জেলার চাতল নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে জগন্নাথপুর উপজেলার বটের খাল নদীর মধ্যে পড়েছে।
আর ডাউকি নদী ভারতে মেঘালয় রাজ্যের শিলং মালভূমির দক্ষিণ- পশ্চিম অঞ্চল থেকে নদীটি উৎপন্ন হয়েছে। এটি একটি ক্ষুদ্র পাহাড়ি নদী।
যার দৈর্ঘ্য মাত্র ৮ কিমি। এটি গোয়াইনঘাট উপজেলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
জাফলং এর অপর পাশে ভারতের ডাওকি অঞ্চল।
উজানে বৃষ্টিপাত হলে ঐসব পাহাড় থেকে ডাওকি নদীর প্রবল স্রোতে পাথর ও শিলা ভেসে আসে। একারণে এই নদীতে প্রচুর পরিমাণে পাথর পাওয়া যায়।
সীমানার ওপারে ভারতের অভ্যন্তরে উঁচু উঁচু পাহাড় দেখা যায়। এসব পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝরণা সবাইকে মুগ্ধ করে।
আর সর্পিলাকারে বয়ে চলা ডাওকি নদীও অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হলে নদী ফুলেফেপে ফিরে পায় তার প্রাণ।
এখানে খাটো জাতের এক ধরণের পাম গাছ দেখা যায়। যা দেশের অন্যকোথাও দেখা যায় না। শীতকালে নীল নদী আর পাহাড়ের মাথায় মেঘের মনোরম দৃশ্য মন্ত্র মুগ্ধ করে রাখে সবাইকে।