ঈদ আনন্দ হোক লোকাল গাইডের সাথে ভাগাভাগি করে আর তাই এই ঈদে বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ঈদ মেলাতে আয়োজন করা হবে মিট-আপ।
কবে হবে?
-ঈদের দ্বিতীয় দিন।
মিট-আপে যা যা থাকছে,
১। প্রথমেই পুরো মেলার মাঠ ঘুরে দেখা।
২। বাংলার ঐতিহ্য নাগোর দোলাই চড়া।
৩। জাদুঘর ও সারকাস দেখা।
৪। মাগরিবের নামাজ আদায় ঐতিহাসিক শাহী মসজিদে।
খরচঃ নাগরদোলা+জাদুঘর+সারকাস দেখাতে সরবোচ্চ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এছাড়া অনান্য খরচ করতে হইলে সেটাও নিজ খরচে।
কেন বাঘাতে মিট-আপ???
-ঈদ আনন্দের সঙ্গে বাড়তি আনন্দ যোগাতে ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে ঈদ মেলা রাজশাহীর বাঘা সহ বাংলাদেশের বিভিন্য অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে ঐতিহ্য হয়ে মিশে আছে ১৫০৫ খ্রীষ্টাব্দ হতে। ঈদের দিন ঘনিয়ে আসায় আনন্দের সঙ্গে বাড়তি উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে আশেপাশের উপজেলার মানুষ। বিশেষত ২০ রোজার পর পরই শুরু হয় ঈদ মেলার আয়োজন। শুধু বাঘা নয়, আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার মানুষের ঈদ আনন্দের সঙ্গে বাড়তি আনন্দ যোগায় ঐতিহ্যবাহী এই ঈদমেলা। জেলার ঐতিহ্যবাহী ও সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে প্রসিদ্ধ বাঘা উপজেলার ঈদ মেলা মূলত ঈদের আগের দিন থেকেই শুরু হয় মেলায় আয়োজন চলে টানা এক মাস। প্রতি বছরের মতো এবারো মেলার আয়োজন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মেলার স্থান ইজারা নেয়া হয়েছে ২০ লক্ষ টাকা।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, আব্বাসীয় বংশের হযরত শাহ মোয়াজ্জেম ওরফে শাহদৌলা (র.) ও তার ছেলে হযরত আবদুল হামিদ দানিসমন্দ (র.)-এর সাধনার পীঠস্থান রাজশাহীর বাঘা। আধ্যাত্মিক এ দরবেশের ওফাত দিবস উপলক্ষে প্রতি বছর ঈদ-উল-ফিতরে আরবী সওয়াল মাসের ৩ তারিখে ধর্মীয় ওরস মোবারক উৎসবকে সামনে রেখে বাঘা ওয়াকফ এস্টেটের উদ্যোগে বিশাল এলাকাজুড়ে আয়োজন করা হয় এ মেলার।
ঢাকা হতে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে ও রাজশাহী হতে ৫০ কিলোমিটার পূর্ব সীমান্ত ঘেঁষা মানুষগুলোর আনন্দ বাঘার ঈদ মেলাকে ঘিরে। তাই এই মেলা এখানকার মানুষের কাছে আবেগ এবং গভীর আগ্রহের। পুরনো স্মৃতির পটভূমিতে নতুন করে আঁচড় কাটে ঈদ মেলা। বছর ঘুরে তাই এই মেলার জন্য অপেক্ষায় থাকে সবাই। যাদের স্বজনরা সীমান্তের ওপারে থাকে, তারা বছরের নির্দিষ্ট এ সময়টা বেছে নেয় একে অপরের সঙ্গে দেখা করার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাদের বসবাস ছুটে আসে তারাও।
পাঁচ শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলায় লাখো মানুষের সম্মিলন ঘটে। গ্রামের মেঠো পথ ছুঁয়ে ধনী-গরিবের মিলনমেলায় পরিণত হয় মেলাকে ঘিরে। দূরের জেলা থেকেও মেলায় আসে মানুষ। শুরু থেকেই ঈদ মেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে ব্যবসায়ীরা। বেচাকেনা চলে ঈদের দিন থেকে শুরু করে শেষ দিন পর্যন্ত। পাওয়া যায়, রকমারি মিষ্টি, খেলনা, সামগ্রী, লোহা ও কাঠের তৈরি আসবাবপত্র, মাটির তৈরি তৈজসপত্রসহ সদরঘাটের পান।
মেলাকে ঘিরে আয়োজন করা হয়, সার্কাস, মৃত্যুকূপ ও মোটরসাইকেল খেলা। এ ছাড়া বিভিন্ন খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়। এবারও একই নিয়মে সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। শুধু তাই নয়, মেলা প্রাঙ্গণে ওরস মোবারককে ঘিরে সারারাত চলে ভক্তদের জিকির, সামা কাওয়ালি। ভক্ত ও আগ্রহী মানুষ এতে যোগ দেয় দূর-দূরান্ত থেকে এসে।
পুণ্য লাভের আশায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নারী-পুরুষ বাঘায় আসে পবিত্র ওরস মোবারকে অংশ নিতে ও মাজারে নামাজ আদায় করতে। তাই বাঘা ওয়াকফ এস্টেট কর্তৃপক্ষ সব সময় ব্যাস্ত থাকে মাজার এর আসে পাশে পরিস্কার পরিছন্ন রাখার।
পাঁচ শ’ বছরের পুরনো ইতিহাস অনুযায়ী এখানে ছিল উপমহাদেশের প্রথম ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়াও মাজার শরীফের পাশে আছে বিশাল দীঘি। বাঘা শাহী মসজিদ এখানকার ঐতিহাসিক নিদর্শন। এ মসজিদের ছবি রয়েছে ৫০ টাকার নোটে। ওরস ছাড়াও সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার মনবাসনা পূরণের জন্য হাজার হাজার দর্শনার্থী আসে বাঘা শাহী মসজিদ ও মাজার শরীফে। এখানে রয়েছে বিশাল আয়তনের স্বচ্ছ পানির দীঘি। এ বছরই এখানে চালু হয়েছে জাদুঘর।