11-07-2019
11:39 AM
- last edited on
04-13-2022
01:19 PM
by
grazittiApiTest
বাংলাদেশের একটি আদিবাসী সম্প্রদায় ‘গারো’। বৃহত্তর ময়মনসিংহ বিভাগে এবং ভারতের মেঘালয় রাজ্যে গারোদের বসতি বেশি দেখা যায়। ‘ওয়ানগালা’ হলো এই সম্প্রদায়ের আদিম ঐতিহ্য এবং প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
আমি মূলত ওয়ানগালা উৎসবের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিতে চাই। দেবতা মিসি আর সালজংয়ের প্রতি ফসল উৎসর্গের এই পূজা-অর্ঘ্য অনুষ্ঠান তাদের গোটা ঐতিহ্যের কথাই বলে।
১৮৬২ সালে খ্রিষ্ট ধর্ম গ্রহণ করে গারো সম্প্রদায়। এরপর তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কৃতিতে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে। তবে অনেকেই তাদের আদি ঐতিহ্য আঁকড়ে ধরে আছেন। বছরে অন্তত একটি বার তারা ফিরে যান শেকড়ের সন্ধানে। খুঁজে পান ঐতিহ্যের ঘ্রাণ। দিনভর পূজা-অর্চনা, স্মৃতিচারণ, নাচগানে মুখর হয়ে ওঠে উৎসব প্রাঙ্গণ। তুলে ধরা হয় গারো সংস্কৃতির বর্ণিল রূপ।
আমরা বলি নবান্ন উৎসব। ওয়ানগালা ঠিক তারই আদল। তবে এটি হয় অনেক বেশি উৎসবের আমেজে। কার্তিক মাসে গারো সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে ওঠে নতুন ফসল। তারা নতুন ফসল আগে নিজেরা ভোগ করেন না। উৎসর্গ করেন তাদের দেবতাকে। একটি দিন শহরও আচ্ছাদিত হয় গারোদের উৎসবের মোড়কে। গ্রাম থেকে গ্রামে চলে নানা আয়োজন।
ঢাকায় সম্প্রতি দুটি ওয়ানগালা উৎসব আমি সামনে থেকে দেখেছি। শহুরে ব্যস্ততা একপাশে রেখে ছুটে আসেন তারা। অনেক দিনের জমিয়ে রাখা গল্পের পসরাও বসে দিনভর। মাঠে স্টলগুলোতে ঘুরে তারা নিজেদের সব ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ নেন। কেউ কেউ আবার বাসার জন্য কিনে নেন জুমের আলু, কুমড়া, বিভিন্ন বুনো শাকসবজি। সংগ্রহ করেন দকমান্দা, দকসারি, থাংকা সরা, রিকমাচ্চুর মতো ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও অলংকার।
মাঠের চারপাশে বসে অস্থায়ী দোকান। তাতে প্রদর্শন করা হয় গারোদের হাতেবোনা বিভিন্ন পণ্য। শুধু ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নয়, বরং এর মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মের মাঝে শত শত বছরের ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা। কালের বিবর্তনে অনেকে তাদের শেকড় ভুলতে বসেছে। বছরে এ রকম একটি আয়োজন তাদের মিলিত করার পাশাপাশি শেকড়ের সন্ধান দেয়।
মাত্র তিন দশক আগেও ওয়ানগালা ছিল গারো সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। কালের আবর্তে এখন সেই উৎসবের গাম্ভীর্য এবং ঐতিহ্যে অনেকটাই ছেদ পড়েছে। তাই নবান্নের শুরুতে দেবতাকে নতুন ফসল উৎসর্গের মধ্য দিয়ে পুরোনো ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার এমন চেষ্টা।
ওয়ানগালা উৎসবে প্রায় সবার পোশাক-পরিচ্ছদে গারো সংস্কৃতির ছাপ। গারো পোশাক নকমান্দা ও টি-শার্ট পরেন তারা। মঞ্চ থেকে গারো সংগীতের সুরে নাচতে থাকেন অনেকে। অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয় জুম নৃত্য, ত্রিপুরা নৃত্য, আচিক নৃত্য, গুরি রওয়া নৃত্য।
ঢাকায় এভাবে ওয়ানগালার বর্ণিল উৎসব হয়ে আসছে ১৬ বছর ধরে। যুগ যুগ ধরে গারোরা তাদের শস্য-দেবতাকে ফসল উৎসর্গ করে আসছে। তবে খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পর গারোদের ঐতিহ্যবাহী সামাজিক প্রথাটি এখন ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে পালিত হয়।
11-07-2019 11:52 AM
@JoinalAbedin অনেক সুন্দর এবং তথ্যবহুল লেখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের বাড়ীতে (টাংগাইল জেলার ঘাটাইলে) এক সময় গারো আদিবাসীরা আসত জ্বালানী কাঠ বিক্রি করতে। আব্বাকে দেখতাম ধান দিয়ে গারোদের কাছ থেকে জ্বালানী কাঠ কিনতে। এখন তেমন একটা বাড়ীতে যাওয়া হয়না। আব্বাও আর বেঁচে নেই। তাই গারোদের কথা পেপার পত্রিকায় না আসলে আর মনে পরে না। তবে আপনার লেখা পড়ে ওদের কথা বেশ মনে পড়ছে। সুন্দর লেখাটির জন্য আবারও ধন্যবাদ। চালিয়ে যান।
11-07-2019 11:55 AM
আমাদের গারো সম্প্রদায় ভালো নেই। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সে তুলনায় অনেকখানি পেছনে পড়ে আছে এই আদিবাসী সম্প্রদায়। তাদের জন্য সরকারের কিছু করার আছে। গারোদের ঐতিহ্য সত্যিই সুন্দর এবং সমৃদ্ধ। ধন্যবাদ আপনাকেও। @MukulR
11-07-2019 12:30 PM
@JoinalAbedin অনেক সুন্দর লিখেছেন ভাই, নতুন কিছু জানতে পারলাম। অনেক তথ্য বহুল পোষ্ট। ধন্যবাদ
11-07-2019 12:34 PM
@JoinalAbedin বেশ তথ্য বহুল পোস্ট। বেশ কয়েকবার প্লান করেও এখনো যাওয়া হয়ে উঠেনি 😞
11-07-2019 12:38 PM
11-07-2019 12:50 PM
Very informative post, really wonderful @JoinalAbedin
Thank you for sharing with us.
11-07-2019 12:54 PM
@JoinalAbedin ভাই, আগে বললে ইভেন্ট করে বা পার্সোনালি যাইতাম। ইন্টারেস্টিং লাাগছে!
11-07-2019 12:55 PM
আপনার লেখা থেকে সব সময় নতুন কিছু জানতে পারি যদিও বিষয়টি অনেক পুরনো ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়। তবে এটি আমার জন্য নতুন। আর সেজন্যেই উদগ্রীব থাকি কবে আপনার লেখা থেকে আবার নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারবো। অসংখ্য ধন্যবাদ @JoinalAbedin আপনাকে ওয়ানগালা উৎসবটি এত সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য।
11-07-2019 01:06 PM
@JoinalAbedin ভাই আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য। আমাদের আদিবাসী দের এই সংস্কৃত তুলে ধরার জন্য। অনেক কিছু জানতেে পারলাম। আর ছবির নিছের লেখা টা যদি ইংরেজিতে দিতেন।