বাংলাদেশ লোকাল গাইড কমিউনিটির ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় এক মেগা মিটআপের আয়োজন করা হয়। এই দিন বাংলাদেশের নানা প্রান্ত থেকে ১৭৪ জন লোকাল গাইড এক সাথে মিলিত হয়। এই মিটআপে আমার জন্য যে বিশেষ এক সারপ্রাইস অপেক্ষা করছে তা আমি একবারও কল্পনা করি নাই।
এই কমিউনিটির সাথে যুক্ত হবার পর থেকে প্রায় সব গুলো মেগা মিটআপে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু প্রফেশনাল এবং পারিবারিক করণে এইবার আমার উপস্থিতি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তায় ছিলাম। তবুও রেজিস্ট্রেশন করি এবং শেষ পর্যন্ত আমি মিটআপে উপস্থিত হই।
ভেন্যুতে পৌঁছাতে আমার একটু দেরি হয়। ততক্ষনে অনুষ্ঠান শুরু হয়ে যায়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সবার পরিচিতি পর্ব থাকে। কে কোথায় থেকে এসেছেন তা একেক করে সবাই বলে। দেরিতে আসার কারণে আমি এই পর্বের প্রায় ৯০% মিস করি। নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান এগিয়ে যেতে থাকে। ফাঁকে ফাঁকে আমি পরিচিত লোকাল গাইডদের সাথে কুশল বিনিময় করি। মিটআপে আসলে অনেকের সাথে দেখা হয়, কথা হয়, অনেক কিছু জানা যায়। এটি আমি খুব উপভোগ করি।
লাঞ্চের আগ মুহূর্তে মাঠে কিছু লোকাল গাইডদের সাথে আমি ছবি তুলছিলাম। হটাৎ একজন বললো “আমার নাম রাফিজ, বাড়ি ফরিদপুর”। সাথে সাথে আমি নিশ্চিৎ হয়ে গেলাম এ আমাদের রাফিজ। রাফিজ আমার ছাত্র জীবনের বন্ধু। রাফিজ এবং আমি এক সাথে হোস্টেলে ছিলাম। রাফিজ খুবই চঞ্চল প্রকৃতির ছিল। তাই সবাই তাকে খুব পছন্দ করতো। ফোন নাম্বার না থাকার কারণে এতো দিন আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলাম।
প্রায় ২০ বছর পর আমাদের দেখা হলো। কথায় কথায় রাফিজ জানালো ও এখন বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে জব করছে। ফরিদপুরে পোস্টিং। এটি তার প্রথম মিটআপ। আমাদের সবার পরিচিত @SanjayBDLG দাদা ওর এক সময়কার সিনিয়র কর্মকর্তা। তারা দুজন দুইজনকে খুব ভালো করে চিনে।
অনুষ্ঠান শেষ হবার আগ পর্যন্ত নানা বিষয় নিয়ে আমরা আলাপ করি। পুরোনো অনেক স্মৃতিচারণ করি। রাফিজ ফরিদপুর থেকে তার এক কলিগের সাথে বাইক চালিয়ে এসেছে। সন্ধ্যার ঠিক আগে বিদায় নিয়ে দুজনে যার যার বাড়ির পথে রওনা দেই। এবারকার ২৩০ তম মিটআপ আমার জীবনে সত্যিই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাংলাদেশ লোকাল গাইড কেবল গুগল ম্যাপের একটি কমিউনিটি নয়। এটি একটি পরিবার, সেতু বন্ধন। তা আরেকবার প্রমাণিত হলো। এমন একটি মিটআপ আয়োজন করার জন্য, মিটআপের হোস্ট @SoniaK আপু এবং এর সাথে জড়িত সকল ভলান্টিয়ারদের অনেক অভিনন্দন।

