Captionঃ হাড়িতে বউয়্যা পরিবেশন এর জন্য প্রস্তুত।
আমাদের বিক্রমপুর তথা মুন্সীগঞ্জের বিশেষ এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার খুদের ভাত বা বউয়্যা ভাত এর কথা অনেকেই শুনেছেন। শুনেছেন বিক্রমপুরের মিষ্টির সুনাম,বা মাওয়াঘাটের পদ্মার ইলিশের কথা কমবেশি আমরা সকলেই জানি এবং শুনেছি। বিক্রমপুরের মানুষ আলহামদুলিল্লাহ আথিতেয়তায় বেশ পটু। আর বিক্রমপুরের সংস্কৃতির বিভিন্ন খাবার এবং পিঠাপুলির স্বাদ ও মাশাল্লাহ অপূর্ব। আজকে আমি চেষ্টা করবো আমাদের বিক্রমপুরের একটি বহুল পরিচিত খাবার – খুদের ভাত ভা বউয়্যা এবং ভর্তা সম্পর্কে।
Captionঃ বউয়্যা খাবার প্রধাম উপকরণ সুস্বাদু মুখরোচক ৮ পদের ভর্তা।
বউয়্যা বা বউয়্যা ভাত এই খাবারের মূল উপকরন হচ্ছে চালের খুদ। যদিও এখন চাল দিয়েই বউয়্যা রান্না হয়। তবে আগের দিনে গ্রাম বাংলায় চাল ভাঙা এবং ঝাড়া সম্পূর্ণ হাতে করা হত। শুকনো ধান থেকে চাল আলাদা করার সময়তে চালের বেশ ছোট ছোট টুকরো জমা হত, যেগুলোকে খুদ বলা হয়ে থাকে। মা খালা বা নানী দাদীদের এভাবেই রান্না করতে দেখেছি যদিও বর্তমানে চাল ঝাড়ার মেশিনের কারণে এই খুদ পাওয়া যায় না, যে কারণে খুদের ভাত এখন রান্না হয় না বললেই চলে। তবে অনেকে শুধু ভাত অথবা পোলাওয়ের চাল দিয়ে খুদের ভাত রান্না করে থাকেন। উল্লেখ্য, খুদ দিয়ে রান্না করা খুদের ভাত এবং শুধু চাল দিয়ে রান্না করা খুদের ভাতের মধ্যে স্বাদের ক্ষেত্রে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। এবং খুদের ভাতের সত্যিকার স্বাদ পেতে হলে অবশ্যই খুদ যোগার করে রান্না করাই উত্তম।
Captionঃ থালায় সাজানো বিভিন্ন আইটেম সহ বউয়্যা ভাত।
খুদের ভাত বা বউয়্যা মূলত একরকমের ভাত, যেটি শুকনা মরিচ বাগাড় দিয়ে, ঝাল ঝাল করে রান্না করা হয়। এজন্য অনেকে এটাকে ঝালভাত ও বলে থাকে। যেমন আমাদের বাড়িতে ফুলকপি সিম বরবটি মটরশুঁটি গাজর সাথে থাকে অল্প পরিমাণের আদা কুচি। যদি কেও ঝাল খেতে না পারেন, তবে মরিচ কম পরিমাণে দেয়া যেতে পারে, তবে ঝাল ছাড়া এই খাবার খেয়ে মজা তেমম একটা পাওয়া যায়না
captionঃ পেয়াজ মরিচ দিয়ে ডিমভাজি।
Captionঃ বন্ধুদের সাথে বউয়্যা পার্টিতে।
Captionঃ বাড়তি আইটেম হিসেবে ছিলো ঝাল ঝাল গরুর গোশত।
captionঃ সেই সাথে মচমচে মুরগী পোড়া।
Captionঃ লেবু এই জিনিস ছাড়া আসলে বাঙালির অনেক কিছুতেই তৃপ্তি হয়না।
Captionঃ সালাদ হিসেবে ছিলো দেশী খিরাই বা শশা।
চলেন এবার তাহলে আসি ভর্তার কথায়। এই খাবার শুধু এবং শুধু ভর্তা দিয়েই খাওয়া হয়, অনেকে ডিম ভাজি দিয়েও খেয়ে থাকে। ভর্তা এই ভাতে যে স্বাদ যোগ করে থাকে, ডিম ভাজি সেটা সম্পূর্ণ করে না। সুতরাং, ভর্তা দিয়ে খেলেই এটা বেশি উপভোগ করা যায়। গ্রামের মানুষজন এই খুদের ভাত খাওয়ার জন্য ২০ থেকে ২৫ পদের শুধু ভর্তাই তৈরি করেন। ভর্তার তালিকায় থাকে আলু, ডাল, ডিম, চিংড়ি, বেগুন, করলা, শাক, ইলিশ মাছের কাঁটা, বরবটি, কালোজিরা,আলু ভর্তা বাদাম ভর্তা সহ বিভিন্ন পদের শুটকি, ইত্যাদি আরও অনেক। ঢাকার মানুষজন ৬ থেকে ১০ পদের ভর্তা দিয়েই ভোজন সম্পন্ন করে থাকেন।
#BDLG #Bangladeshlocalguide #Bhouyavat #Localguideconnect #Letsguide