মহেড়া জমিদার বাড়ি, দুবাইল, মহেড়া টাঙ্গাইল

চারিদিকে ঠুস ঠাস গোলাগুলি আওয়াজ, পুলিশবাহিনী আপনার দিকে বন্দুক তাক করে দাঁড়িয়ে আছে, থম্থমে পরিবেশ, কিন্তু আপনি নিরভিগ্নে হেটে বেড়াচ্ছেন। বিভিন্ন অবকাঠামো, দেখছেন, পুরাকীর্তি দেখে অবাক হচ্ছেন, কেমন হবে ব্যপারটা? একদম ভিআইপি ব্যাপার স্যাপার।

হ্যা, ঠিক ধরেছেন, মহেড়া জমিদার বাড়ির কথা বলছিলাম, বর্তমানে যেটা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার নামে পরিচিত। হ্যা, তবে, এই ট্রেনিং সেন্টার না থাকলে হয়ত, এই জমিদার বাড়ি এতদিনে বিলীন হয়ে যেত। প্রায় ২০০ বছরের ঐতিহ্য বহন করে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই মহেড়া জমিদার বাড়ি।
খুবই সুন্দর এবং অত্যাধুনিক ডিজাইন, রুচিশীল পরিবেশে তৈরী করা হয়েছিল এই বাড়ি। বর্তমানে পুলিশ বাহিণীর ট্রেনিং সেন্ট্রার হিসেবে এটি ব্যবহ্রত হচ্ছে। অরিজিনাল কাঠামো ঠিক রেখে মেরামত করা হয়ছে প্রায় সব ক’টি বাড়ি। স্থাপন করা হয়েছে ছোট্ট চিড়িয়াখানা, যেখানে নিরভিগ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে উটপাখি, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির হাস ইত্যাদি। অনেকেই আমরা সামনের অংশটুকু দেখে আর পেছনের দিকে যাই না, আসলে পেছনের সৌন্দর্য অন্যরকম, রয়েছে পাসরা পুকুর, চিড়িয়াখানা, ঝর্না, পার্ক ইত্যাদি।

কিভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে সকালে গিয়ে ঘুরে বিকালে চলে আসতে পারবেন অনায়াসে গ্রুপে গেলে সারাদিনের জন্য গাড়িভাড়া করে নিতে পারেন।

এছাড়াও রয়েছে বাস যেমন সকাল-সন্ধ্যা এসি বাস, সোনিয়া, বিনিময় এসি বাস, যেটা কল্যানপুর থেকে ছাড়ে, ভাড়া ২৫০.০০ অথবা সকাল সন্ধ্যা নন এসি ভাড়া ১১০.০০। মহাখালী থেকেও অনেক বাস ছাড়ে যেমন, নিরালা সুপার, মহানগর ইত্যাদি। যদি জ্যাম না থাকে ২ ঘন্টার ভেতরে আপনি পুলিশ রোড/ দুবাইল নেমে যাবেন, (টাঙ্গাইল শহর থেকে ১২ কিমি আগেই দুবাইল)।

বাস থেকে নেমে অটোতে করে জন প্রতি ১৫ টাকা তে চলে যাবেন জমিদারবাড়ি।

প্রয়োজনে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করতে পারেন।

প্রবেশমুল্যঃ মাত্র ৫০.০০

কি কি দেখবেনঃ

মনে রাখবেন, আপনি একটি সংরক্ষিত জায়গায় ভ্রমণে বের হয়েছেন, কোণ সমস্যা হলে সাথে পুলিশ ভাইদের সাহায্য নিতে পারেন। মিউজিয়াম ছাড়া বাকি অবকাঠামোর ভেতরে কিংবা ছাদে যাওয়া যাবেনা, কারন, এখানের প্রতিটা অবকাঠামো সরকারি কাজে ব্যবহ্রত হচ্ছে। পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের প্রশাসনিক কাজে।

টিকেট কেটে আপনি প্রথমে মিউজিয়াম ঘুরবেন, এখানে এই জমিদার বাড়ির ইতিহাস লেখা রয়েছে।

এরপরে আপনি একে একে মহারাজ লজ, আনন্দ লজ দেখবেন, এর পেছনেই রয়েছে ছোট্ট চিড়িয়াখানা, যেখানে নিরভিগ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছে উটপাখি, হরিন, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির হাস ইত্যাদি। অনেকেই আমরা সামনের অংশটুকু দেখে আর পেছনের দিকে যাই না, আসলে পেছনের সৌন্দর্য অন্যরকম, রয়েছে পাসরা পুকুর, চিড়িয়াখানা, ঝর্না, পার্ক ইত্যাদি। রয়েছে রিফ্রেশমেন্ট রুম এবং ক্যান্টিন ব্যবস্থা।

ইচ্ছা মত ঘুরবেন, ছবি তুলবেন, কিন্তু কোন স্থাপনাতে হাত দেয়া যাবেনা, কোথাও পরিবেশ নোংরা করা যাবেনা।

বিঃদ্রঃ ঘুরাঘুরি করে এবং সময় হাতে থাকলে চলে যেতে পারেন টাঙ্গাইল শহরে, দুবাইল বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫-৭মিনিট পরে পরে লোকাল বাস আসে। টাঙ্গাইলের যেকোন বাসে উঠলেই নতুন বাস স্ট্যান্ড নামায় দিবে। হাতে সময় থাকলে একটা অটো নিয়ে ঘুরে আসুন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়। ফিরতি পথে শহর থেকে পোড়াবড়ির চমচম খেয়ে নিতে ভুলবেন না।
এবং নতুন বাস স্ট্যান্ড থেকে আবার একই বাসে করে প্রানের শহর ঢাকা চলে আসবেন।

সবার জার্নি শুভ হোক

শুক্রবার,

৮/১২/২০১৭

7 Likes