কুমিল্লার শতাধিক বছরের পুরোনো ঐতিহ্যের নিদর্শন ‘রানীর কুঠি’। এটি নগরীর প্রাণকেন্দ্র ধর্মসাগর দিঘির উত্তর পাড়ে অবস্থিত। মূলত এটি ছিল ত্রিপুরা রাজবংশের তৈরি একটি বিশ্রামাগার। ধারণা করা হয়, মহারাজ ধর্মমাণিক্য ১৪৫৮ সালে স্থানীয় বাসিন্দাদের পানির সংকট দূর করতে ২৩.১৮ একর জায়গা নিয়ে ধর্মসাগর দিঘি খনন করেন। পরবর্তীতে মহারাজ উদয় মাণিক্যের নির্দেশে দিঘির উত্তর তীরে ১.২৩ একর ভূমির উপর নির্মাণ করা হয় রানীর কুঠি। এক সময় এটি মহারাজা মাণিক্য কিশোর বাহাদুরের স্ত্রী বাসভবন হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।
(ড্রোনের মাধ্যমে ধর্মসাগরের ছবিটি তুলেছেন মাহফুজুল হাসান)
বর্তমান অবস্থা ও সংকট
বর্তমানে ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ছাদের টিন ফুটো হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই পানি ঢুকে পড়ে। বর্ষাকালে ভেতরের মেঝে স্যাঁতসেঁতে থাকে, দরজা-জানালা ভেঙে পড়ছে। অযত্ন আর অবহেলায় কুঠিটি এখন অনেকটা পরিত্যক্ত ও ভূতুড়ে বাড়ির রূপ নিয়েছে।
সংরক্ষণ ও ব্যবহার
২০০৯ সালের ২২ এপ্রিল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর রানীর কুঠিকে সংরক্ষিত প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করলেও সংরক্ষণের উদ্যোগ তেমন চোখে পড়েনি। জেলা প্রশাসন, বার্ড ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মধ্যকার মালিকানা জটিলতার কারণে দীর্ঘদিনেও সংস্কার সম্ভব হয়নি। বার্ড অতিথিশালা হিসেবে এটি ব্যবহারের জন্য ইজারা নিলেও বর্তমানে পানি পড়ার কারণে ব্যবহার বন্ধ রয়েছে।
রানীর কুঠির গুরুত্ব ও আবেদন
ইতিহাস, স্থাপত্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য মিশেল রানীর কুঠি। এর সামনে শান-বাঁধানো ঘাট ও বিশাল গাছের ছায়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। একসময় এখানে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বিশ্রাম নিয়েছেন। সংরক্ষণের অভাবে আজ এই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে। যথাযথ সংরক্ষণ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এটি কুমিল্লার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠতে পারে।
@MehediHasanTanvir It is tragic to see a place with such rich and important history go neglected, but hopefully efforts like yours to bring attention to it will help bring help and funding to preserve it for future generations. Thanks so much for sharing!