২০১৯ সালে মোগলদের ব্যবহার করা লালবাগ কেল্লার হাম্মামখানার সংস্কার, সংরক্ষণের কাজ হাতে নেয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ছিল গবেষণা ও ডকুমেন্টেশনের মাধ্যমে লালবাগ কেল্লার হাম্মাম ভবনের সংস্কার, সংরক্ষণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং শনাক্তকৃত ক্ষতি প্রশমনের জন্য জরুরি কিছু সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ, বৈদ্যুতিক কার্যক্রম ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন।
এসব কাজ সম্পন্ন কবার জন্য সময়কাল ধরা হয়েছিল ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
হাম্মামখানা বলতে আমরা যে ভবনটিকে বুঝি, সেটি আসলে দরবার হল ও গোসলখানার মিলিত রূপ। তবে সংস্কারের সময় আবিষ্কৃত হয় গোসলখানার মূল ভবনটি আসলে দরবার হল বা দেওয়ানি-ই-আমের (যেখানে মোগল শাসকরা জনগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন) আগেই তৈরি করা হয়েছিল।
(এই ছবিটি কালের কন্ঠ থেকে নেয়া)
হাম্মাম ভবনটি মোগলরা ছাড়াও ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের সময় সিপাহীদের আবসনের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে তখন এই স্থাপনায় সংস্কার করা হয় । পাকিস্তান পর্বে ১৯৬৮ সালে পুনরায় এখানে সংস্কার করা হয় এবং বাংলাদেশ পর্বে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করছিল। নিজেদের প্রয়োজনে তারা এটিকে পরিবর্তন করেছে। ফলে ভবনটির স্থাপত্যিক বৈশিষ্ট্য ও উপাদানের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। ষাটের দশকে ভবনটিকে আদি নকশায় ফিরিয়ে নিতে কাজ করেছিল পূর্ব পাকিস্তানের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর। কিন্তু সেটা পুরোপুরি সম্পন্ন করা যায়নি।
গোসলখানায় প্রাকৃতিক আলো প্রবেশের জন্য ছাদে পাঁচটি ফুটো ছিল। এত দিন বন্ধ থাকা সেই ফুটোগুলো আবার উন্মুক্ত করা হয়েছে। ফলে মোগল আমলে হাম্মামখানার ভেতরটি যেভাবে দেখা যেত, দর্শকরাও এখন সেভাবে দেখতে পারবে। গোসলখানায় ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে বেশ কিছু জানালা তৈরি করা হয়েছিল, সেসবও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ওপরের ফুটোগুলো দিয়ে যাতে বৃষ্টির পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য স্বচ্চ কাচ দিয়ে সেগুলো ঢেকে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রাকৃতিক আলো আসতে কোনো সমস্যা হবে না।
এবং অবস্থা বোঝার জন্য করা হয় ক্র্
হাম্মামখানার মধ্যে বড় কক্ষের চারপাশে আরো চারটি কক্ষ আছে। এসব কক্ষে মোগলরা পোশাক পরিবর্তন করতেন, শরীরে তেল মর্দন করতেন, শরীরটাকে ভিজিয়ে নিতেন ছোট চৌবাচ্চাতে।
শাসনকার্যের সূত্র ধরে মোগলরা ভারতবর্ষের যেখানেই গেছেন, সেখানেই নিজেদের জন্য হাম্মামখানা বানিয়েছেন।’