পদ্মা মেঘনার রূপালী ইলিশের জন্য এখন চাঁদপুর কে বলা হয় ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। ভোজন রসিক বাঙ্গালীর জন্য ইলিশ মাছ একটি আবেগ ও ভালোবাসার নাম এই মাছ পছন্দ করেনা এমন কোন বাঙালি হয়তো খুঁজলেও পাওয়া যাবে না। গরম ধোয়া ওঠা ভাতের সাথে সে সরষে ইলিশই হোক বা ইলিশ ভাঁপাই হোক সেটা প্রতিটা বাঙালির জিভে জল আনবেই।
এই ইলিশ মাছের প্রজনন ও উৎপাদন এইসব বিষয়ে গবেষণা চলে আসছে বহুকাল আগে থেকেই।
প্রায় ৩৩ বছরের গবেষণার সফলতায় দেশে ইলিশের উৎপাদনও বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। জাতীয় মাছ ইলিশ সম্পদকে আরও সমৃদ্ধ করতে সরকারও নানা পদক্ষেপ নিয়েছে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য নানা কাজ পরিচালনা করছে।২০০৩-০৪ সালে উন্নত ইলিশ ব্যবস্থাপনার কৌশল গ্রহণ করে জাটকা সংরক্ষণ পদ্ধতির ওপর কাজ হলে আস্তে আস্তে ইলিশ উৎপাদনও বাড়তে থাকে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে নদী ও সাগরে জাটকা সংরক্ষণের পাশাপাশি মা ইলিশ রক্ষায় অভয়াশ্রম ঘোষণা ও প্রজনন সময়ে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। এতে ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়তে থাকে।
মা ইলিশ মিষ্টি পানিতে তাদের নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট জায়গায় ডিম ছাড়ার পর আবার সাগরে ফিরে যায়। সহজে বা নিরাপদে ডিম ছাড়ার জন্য প্রতিবছর ২২ দিন (বর্তমানে ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর) নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখা হয়। এসব ডিম থেকে পোনা জন্ম নেওয়ার পর নভেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ৬ মাস ইলিশ মিষ্টি পানির নদীতে অবস্থান করে। জুন মাসের দিকে এসব ইলিশের পোনা জাটকায় রূপ নেয়। এ জন্য মার্চ–এপ্রিল এ দুই মাস আবার বড় হওয়ার জন্য নদীতে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
চাঁদপুর ভ্রমণের টুকিটাকি: ঢাকা থেকে চাঁদপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ ভালো। ঢাকার সদরঘাট থেকে চাঁদপুরগামী লঞ্চে করে খুব সহজেই চাঁদপুর যাওয়া যায়। সবচেয়ে ভালো হয়, রাত ১২টার লঞ্চে করে চাঁদপুর এসে সারাদিন ঘুরে পরের দিন রাত ১২টায় লঞ্চে ঢাকা ফেরত এলে।
লঞ্চের ভাড়াও রয়েছে হাতের নাগালের মধ্যে আপনি যদি ডেকে করে যান তাহলে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে দুইশত টাকা মাত্র, এছাড়াও রয়েছে প্রথম শ্রেণি, বিজনেস শ্রেণী এবং কেবিনের ব্যবস্থা মান ভেদে সেসবের ভাড়াও পড়বে একটু বেশি।
এ ছাড়াও সায়েদাবাদ থেকে বাসযোগেও চাঁদপুর যেতে পারবেন। কমলাপুর থেকে ট্রেনে লাকসাম নেমে সেখান থেকেও চাঁদপুরে যাওয়া যায়। তবে সবাই মিলে একদিনের ট্যুরে যেতে লঞ্চে যাওয়াই বেশি মজার। নদীর বুকে ভেসে ভেসে ইলিশের শহর চাঁদপুরে যে কখন পৌঁছে যাবেন, টেরই পাবেন না।