বসন্ত মানেই বর্ণিল প্রকৃতির হাতছানি, গাছে -গাছে শিমুল পলাশের আগুনঝরা রূপের বাহার। ঋতুরাজ বসন্তের এমনই স্নিগ্ধতা ছড়ানো মাতাল হাওয়ার পরশে সিক্ত দিন অমর ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে হয়ে গেল বাংলাদেশ লোকাল গাইড কমিউনিটির দশম বর্ষপূর্তির মিলনমেলা 10 Year’s Celebration Meetup!
বাড্ডার সাঁতারকুলে অবস্থিত Fatema’s Dell ভেন্যুতে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে Bangladesh Local Guides এর বিশেষ মিটআপ। সারাদেশ থেকে বাছাইকৃত সদস্যদের অংশগ্রহণ ছিলো নতুন ও পুরনোর এক অপূর্ব মেলবন্ধন।
ভেন্যুর প্রবেশদ্বারেই বসেছিলো অংশগ্রহণকারীদের জন্য উপহার সামগ্রীর বুথ,তারই পাশে দুর্দান্ত স্বাদের কফি স্টেশন।
প্রথমেই সবাইকে রেজিস্ট্রেশন অনু্যায়ী মিটআপ টি-শার্ট ও অন্যান্য গিফট সযত্নে তুলে দেওয়া হয় আয়োজকবৃন্দের পক্ষ হতে। তারপর খানিকটা সময় গ্রুপ ফটোশুটের জন্য। অধিকাংশ সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর সারিবদ্ধভাবে একে একে সকালের নাস্তা পরিবেশন ।
ব্রেকফাস্ট ও চা চক্র শেষে শুরু হয় প্রথম সেশন। আগত সকলের পরিচয় প্রদানের মধ্যদিয়ে প্রাণবন্ত এক সেশন। দেশের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সের লোকাল গাইডদের পরিচয় পর্ব হাসি -আনন্দে ছিলো পরিপূর্ণ। নিজস্ব আঞ্চলিক ভাষায় যার যার পরিচয় তুলে ধরার মধ্যদিয়ে মুহুর্তেই যেন ঘুচে গেল অচেনা -অজানার সেই দূরত্ব। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী পরিচিতি পর্ব শেষে শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব।
এই পর্বে নতুন লোকাল গাইডদের নানা প্রশ্নের উত্তর প্রদান করেন কমিউনিটির অভিজ্ঞ সিনিয়র সদস্যবৃন্দ। নানা টেকনিক্যাল প্রশ্নোত্তরের এই সেশনের বিরতি নামে মধ্যাহ্ন ভোজের ঠিক পূর্বে। বসন্তের মৃদু রোদ গায়ে মেখে দমকা হাওয়ার সমারোহে সবুজ ঘাসের চাঁদরে আমাদের মধ্যাহ্নভোজের দৃশ্যটি সত্যিই উপভোগ্য ছিলো।
মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর পুনরায় সেশন ফিরে যাই, একে একে কমিউনিটির বর্তমান পরিচালনা কমিটির সদস্যদের প্রতিক্রিয়া শুনি, মিটআপ হোস্টের বক্তৃতা থেকে নানা দিকনির্দেশনা ও উৎসাহব্যঞ্জক মূল্যবান ধারণা পাওয়া যায়।
লোকাল কমিউনিটির পূর্বের প্ল্যাটফর্মের দুই অভিজ্ঞ ও নিবেদিত প্রাণ এবারের মিটআপে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে এসেছিলেন, শুনিয়েছেন গুগল ম্যাপের সাথে তাঁদের পথচলার গল্পটা!!
পড়ন্ত বিকেলে শেষ সেশনটা দলীয় ফটোসেশন, ভলান্টিয়ার সম্বর্ধনা ও ফান একটিভিটিতে দারণ কেটেছে।
মিটআপ হোস্টের থেকে একে একে আয়োজক টিমের নিবেদিত সদস্যদের ক্রেস্ট ও উষ্ণ করতালির মাধ্যমে সম্মানিত করার প্রয়াসটি অন্যদেরও ভলান্টিয়ারিং কাজে সম্পৃক্ত হবার জন্য উৎসাহ প্রধান করবে বলেই আমার বিশ্বাস।
পরিশেষে, একটা দিন কেটেছে মন্ত্রমুগ্ধের মতো। যে দেশের মানচিত্রে আঁকতে গিয়ে ৩০ লাখ শহিদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে যে পবিত্র ভূমি, সেই প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের মানচিত্রকে আরও বেশি তথ্যপূণ, নির্ভুল ও বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী করার যে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সেই গোষ্ঠীর একজন হতে পেরে সত্যিই সম্মানিত বোধ করেছি।