হিজল গাছ, যারা হাওর জনপদের বাসিন্দা নয় তাদের কাছে এক বিস্ময়ের নাম! সাধারণ গাছের শেকড় দীর্ঘদিন পানির নিচে থাকলে তা পঁচে যায়; গাছটি মরে যায়। কিন্তু দীর্ঘজীবী এই হিজল গাছ শুকনো ও বর্ষা উভয় মৌসুমেই জীবন ধারণ করতে পারে। শুকনো মৌসুমে হাওর যখন শুকিয়ে যায় তখন মাঠ ভর্তি সারি সারি হিজল গাছের বাগান দেখতে খুবই মনোরম! ঠিক তেমনি ভরা বর্ষায় হাওর যখন কানায় কানায় পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় তখন হিজল গাছগুলো হাওরের পানিতে অর্ধ ডুবন্ত অবস্থায়ও দিব্যি বেঁচে থাকে, যা হাওরের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। অর্ধ ডুবন্ত অবস্থায় থাকায় গাছগুলো হাওরের মাছ ও জলজ প্রাণীকুলের আশ্রয়স্থল হিসেবে কাজ করে। এভাবে হিজল গাছ হাওর অঞ্চলের জলজ প্রাণীবৈচিত্র্য রক্ষায়ও ভূমিকা রাখে।
(শুকনো মৌসুমের হিজল বাগান) (বর্ষায় অর্ধডুবন্ত হিজলবন)হাওর এলাকার ‘আইকনিক ট্রি’ হিজল গাছ একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। এই গাছে সাধারণত বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে গোলাপি বা লালচে গোলাপি রং এর ফুল ফোটে। হিজল গাছে একটি লম্বা পুষ্পদণ্ডের মাঝে অনেকগুলো ছোট ছোট ফুল ফোটে। ফুলগুলো একটি অসাধারণ সুমিষ্ট ঘ্রাণযুক্ত হয়ে থাকে, গভীর রাতে ফুলগুলো ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়।
(ঝরে যাওয়া ফুলের পুষ্পদন্ড)সেরকমই অসাধারণ সুন্দর একটি বিশাল হিজল বাগান আমাদের হাওরবিধৌত মোহনগঞ্জের আখৈলখলার হিজলবন; শুকনো মৌসুমে যেটি একটি পর্যটনকেন্দ্রে পরিণত হয়। মানুষ সেখানে সবুজের মাঝে ঘুরতে ও পিকনিক করতে যায়।
Maps link: