আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। শেরপুর, জামালপুরের দিকটাতে এর আগে কখনও যাওয়া হয়নি। জুলাইয়ে হঠাৎ খালাতো ভাইয়ের বিয়ে পড়ে গেল। মেয়ে শেরপুরের।
বাগেরহাট এর ছেলে বিয়ে করছে শেরপুরে সেটা প্রথমবার শুনে বিরক্তি ভাব প্রকাশ করেছিলাম। বরযাত্রীর সাথে না গেলে পারিবারিক সম্পর্কের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে বাধ্য হয়ে ঢাকা থেকে আমরা কজন আত্মীয় মিলে শেরপুরের দিকে রওয়ানা হলাম।
বিরক্তিভাব ঠিক তখনই কমলো যখন নালিতাবাড়ির কোনও এক জায়গায় নেমে অটো-রিকশা নিলাম। ধীরে-ধীরে ছোট-ছোট পাহাড়ের মাঝখান দিয়ে অটো-রিকশা চলতে লাগল। চারপাশে সবুজ আর সবুজ। মাঝে মাঝে লাল কিংবা মেটে রঙের মাটির বাড়ি। ছোট্ট-ছোট্ট গাছে আম ধরেছে। আম মাটি ছুঁয়ে বড় হচ্ছে। পুকুরে লাল শাপলা ফুটে আছে। কম ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলটির মত এই দৃশ্যগুলো এমনকি আমাদের অঞ্চলের গ্রামগুলোতেও দেখা যায়না।
এতক্ষণ নতুন বরকে বকাবকি করা আমি হাঠাৎই তাকে ধন্যবাদ দেয়া শুরু করলাম। তিনি কয়েকশত কিলোমিটার দূরের এই শেরপুরের গ্রামটিতে বিয়ে না করলে হয়ত অজানা-ই থেকে যেত, বাংলাদেশে ছবির মত গ্রাম প্রকৃতপক্ষেই আছে।
পুরো একদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলাম গ্রামটিতে। মুগ্ধ হয়ে দেখেছি আর ঘুরে বেরিয়েছি। যতটুকু মনে হয়েছে হয়ত শতবছর আগে পাহাড় কেটে কেটে এখানে বসতি স্থাপন করেছে গ্রামের গোড়া পত্তনকারীগণ। তবে এখানে একটা স্বস্তির ব্যাপার হলো তারা যতটুকু প্রয়োজন হয়েছে ঠিন ততটুকুই পাহাড় কেটেছে। এর বাইরে একচুলও বেশি মাটি কাটেনি। এটা আমার পর্যবেক্ষণ পরবর্তী নিজস্ব মতামত।
জায়গাটিতে বাস থেকে নামার আগ পর্যন্তও যেতে না চাওয়া আমি আরও কয়েকবার শেরপুরের ঐ জায়গাটিতে যেতে চাই। ইন্টারনেট সিগন্যাল তো দূরে থাক; সাধারণ নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়না এমন একটি জায়গায় আরও কয়েকটি দিনের জন্য নিরুদ্দেশ হতে চাই।
#connectdayBangladesh #localguidesbd