প্রাকৃতিকনগরী বলা চলে সিলেটকে। সবুজশ্যামলে ঘেরা পাহাড়, ঝর্ণা, চা বাগান, বন আর হাওর কী নাই সেখানে!। সিলেটের অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্রের মধ্যে অন্যতম নয়নাভিরাম ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর। পাথর, পানি আর পাহাড়- এ তিন নিয়ে সিলেটের ভোলাগঞ্জ। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদের উৎসমুখে এর অবস্থান।
এটি সীমান্ত এলাকারমেঘালয় রাজ্য থেকে নেমে এসেছে। ওপারে উঁচু পাহাড়ে ঘেরা সবুজের মায়াজাল। সেখান থেকে নেমে আসা ঝরনার অশান্ত শীতল পানির অস্থির বেগে বয়ে চলা। গন্তব্য তৃষ্ণার্ত ধলাইয়ের বুক। স্বচ্ছ নীল জল, সাদা পাথর আর পাহাড়ের সবুজ মিলেমিশে যেন একাকার। ধলাইয়ের বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা পাথরের বিছানা শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে হাজার গুণ।
সাদাপাথর এর এমন প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য উপভোগ করতে প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশের পর্যটক আর ভ্রমণপিপাসু মানুষ ভিড় জমান সেখানে। আমরাও তিনজনের একটি টিম শহরের কোলাহল ছেড়ে সেখানে ছুটে যাই। উপভোগ করি মহান রাব্বে কারিম এর সৃষ্টি নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য। আর মুগ্ধতায় ডুবে যাই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লার প্রতি বিশ্বাস বেড়ে যায় হাজারগুণ। এমন দৃশ্য উপভোগ করে যেকেউ মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই।
যেভাবে ছুটে চলি…/
• প্রথমে ঢাকা থেকে বাসযোগে সিলেট বাস টার্মিনাল। (বাসভাড়া ৪৭০টাকা থেকে ৩৫০টাকা পর্যন্ত)
• তারপর সেখান থেকে সি.এন.জি যোগে সিলেট শহরের আম্বরখানা। (জনপ্রতি ২০/২৫ টাকা)
• সেখানে দ্বিতল বি আর টি সি বাস আছে, যেগুলো প্রতি এক ঘন্টা পরপর সরাসরি সাদাপাথর ঘাটে নিয়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৮০টাকা। আমরা বাসে উঠে দ্বিতলায় একেবারে সামনের সিটে বসি। আম্বরখানা থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কটির চারপাশে শুধু সবুজ চা বাগান। দেখলে মনে হয় নীল আকাশ যেন সবুজ গালিচার ওপর তাঁবু টানিয়েছে। সড়কটি ধরে চলতে চলতে সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় মন। দু’হাতে প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে আলিঙ্গন করতে পারলে মন্দ হতো না!।
এসব প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে ঘন্টাখানেক এর মধ্যে পৌঁছে যাই সেখানে। (ন্যাচারাল ভিউয়ের জন্য দুতলায় বসে যেতে পারেন)।
• বাস থেকে নেমে সাদাপাথর এর জন্য ট্রলার রিজার্ভ করি। এক্ষেত্রে আমাদের সাথে আরো দুটি টিম যুক্ত হয়, সর্বোচ্চ ৮/৯ একসাথে যাওয়া যায়। (ট্রলার ভাড়া ৮০০ টাকা। সেহিসেবে জনপ্রতি ১০০টাকা পড়বে।) নৌকা যত সামনে এগোয়, মুগ্ধতা ততই বাড়তে থাকে। ধলাই নদের স্বচ্ছ নীল জলে নৌকা চলতে চলতে চোখে পড়ে মেঘালয়ের আকাশছোঁয়া পাহাড়। মনে হচ্ছিল আকাশে হেলানো উঁচু উঁচু পাহাড়ের সারি। দেখতে দেখতে পৌঁছে যাই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য সাদাপাথরে।
(ট্রলার থেকে নামার সময় মাঝির নাম্বার রেখে দিবেন, ঘুরাঘুরি শেষে তাকে ফোন দিলে সে ঘাটে পৌঁছে দিবে।)
• যেভাবে আসছেন, আবার সেভাবে ব্যাক করবেন।
• সাদা পাথর যাবার সবচেয়ে ভাল সময় হচ্ছে বর্ষাকাল ও তার পরবর্তী কিছু মাস। অর্থাৎ জুন থেকে ডিসেম্বর মাসের যেকোন সময় ঘুরে আসতে পারেন। অন্যসময় গেলে পাথরময় সৌন্দর্য দেখতে পেলেও নদীতে পানি প্রবাহ তুলনামুলক কম পরিমাণে থাকে।
it’s my first post in connect