২৮শে অগাস্ট ২০২০, সকাল আমরা ঢাকা ইস্কাটন থেকে তিনটি মোটরবাইকে পাঁচজন রওনা দিলাম সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উদ্দেশে।
প্রায় ৩০৮ কিলোমিটারের লম্বা রাইড। তাই শুরুতে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরনীতে সাউদার্ন সিএনজি স্টেশন থেকে ফুল ট্যাংকি অকটেন ভরে নিলাম। এই পাম্প এর অকটেনের মান ভালো। রেস এবং ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়। যদিও কোয়ান্টিটি নিয়ে আমার একটু সন্দেহ আছে। যাই হোক, সকালে কেউ নাস্তা করিনি তাই ঠিক করলাম নরসিংদী তে নাস্তা করবো। যেতে যেতে পথে বৃষ্টি আমাদের সঙ্গী হলো। আমার কাছে রেইনকোট ছিল না তাই রাস্তার টং দোকানএ দাঁড়ালাম একটু পর বৃষ্টি থেমে গেলে। যাই হোক নরসিংদীতে একটা হোটেলএ নাস্তা করে ব্যাগগুলি প্ল্যাস্টিক দিয়ে ভালো করে মোটরসাইকেল এর সাথে বাঁধলাম। আবার চলা শুরু করলাম। এর মাঝে আমরা দুপুর খাওয়ার জন্য থামলাম। বিকাল এর দিকে ফেরি পার হলাম।
You can watch the video to experience our journey:
সুনামগঞ্জে ঢোকার সাথে সাথে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। যদিও সারা রাস্তায় বৃষ্টি একটু পর পর আমাদের সঙ্গ দিচ্ছিলো। কিন্তু তাহিরপুর এর বৃষ্টি আর রাস্তা অনেক ভাঙা একটু পর পর ভালো রাস্তা, আবার পুরাটা ভাঙা। আর বাইকের হেডলাইট এর আলোতে কাজ হচ্ছিলো না। মাঝে মাঝে বিশাল বিশাল গর্ত। আবার নেই রেইনকোট রেইন কোট নাই। তাই অবস্থা হলো যা তা।এই রকম করেই রাতে ১০ টার দিকে আমরা পোঁছে গেলাম তাহিরপুর বাজারে। ওই খানে নৌকা ঘটে আমাদের জন্য ফয়সাল ভাই অপেক্ষা করছিলেন। আমরা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন- সাবান গামছা স্যান্ডেল ইত্যাদি কিনলাম। এর পর আমরা ঘটে গেলাম। আমাদের জন্য বিশাল নৌকা অপেক্ষা করছিলো।এই নৌকায় প্রায় ৫০ জন উঠেতে পারে। ৫ জন আর নৌকার ৫ জন মিলে ১০ জন বিশাল এই নৌকায় উঠলাম।সাধারণত এই রকম নৌকার ভাড়া ১৬০০০ টাকা কিন্তু ফয়সাল ভাই আমাদের বন্ধু মানুষ তাই এই রাজকীয় ব্যবস্থা এতো কম খরচই। যাই হোক, আমরা নৌকাতে বাইক তুলে নৌকার ছাদে রাখলাম।তখন তুমুল বৃষ্টি আর থেকে থেকে ব্রজপাত হচ্ছে। আমরা সবাই কাক ভেজা তখন। তাই তাড়াতাড়ি হাওর থেকে বালতিতে পানি তুলে নৌকার ছাদেই গোসল সেরে নিলাম।এরপর হাওরের মাছ দিয়ে রাতের খাবার শেষ করলাম। আস্তে আস্তে বৃষ্টি ঝড় এর রূপ নিলো তাই আমরা ঘটে এ রাত কাটাবো সিদ্ধান্ত নিলাম। আড্ডা আর গানে ধীরে ধীরে রাত গভীর হলে আমরা ঘুম দিলাম। সকাল সকাল উঠে বারবিকিউ আর খিচুড়ি দিয়ে নাস্তা সারলাম। এরপর আমরা টাঙ্গুয়ার হাওর এর দিকে নৌকা ছাড়লাম। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরনা এসে মিশেছে এই টাঙ্গুয়ার হাওরে। ৫১টি হাওরের সমন্বয়ে ৯,৭২৭ হেক্টর এলাকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এই হাওরে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০ প্রজাতির পাখি, ২০০ প্রজাতির মাছ, ১২’র বেশি প্রজাতির ব্যাঙ, ১৫০-এর বেশি প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণীর আবাস। নৌকায় যেতে যেতে হাওয়ের মানুষের জীবনযাত্রা দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম। এক একটি বাড়ি যেন এক একটি দ্বীপ।যেতে যেতে লক্ষ্য করলাম যায় হাওরের প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতে কমপক্ষে একটি করে নৌকা আছে। পানিবেষ্টিত এই এলাকার এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাতায়াতের একমাত্র বাহন। এরপর আমার এক জায়গায় নৌকা ভিড়ালাম হাওরে গোসল করার জন্য। আমরা সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে পানিতে নামলাম। হাওরে নামার সময় চেষ্টা করবেন লাইফ জ্যাকেট পরে নামার কারন চোৱ স্রোতে পড়তে বিপদ হতে পারে। আমরা হাওরে বসে চা খেলাম।এর মধ্যে শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি যেটা আমাদের এই অভিযানের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিলো শতগুন। ঘন্টা দুয়েক পানিতে ঝাপাঝাপি করে আবার যাত্রা শুরু করলাম এইবার এর লক্ষ্য টেকেরঘাট। যেতে যেতে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। টেকেরঘাটে আমরা মোটরবাইক সহ নামলাম। বিকালে গেলাম বাজার দর্শনে। এর পর বিকেলে মোটরসাইল নিয়ে উঁচুনিচু পাহাড় পেরিয়ে বারিক্কাটিলার দিকে রওনা দিলাম। রাস্তা অনেক ভাঙা কিন্তু আসেপাশের দৃশ্য অসাধারণ। বিকালটা কাটালাম বারিক্কাটিলায় সেখান থেকে যাদুকাটা নদীর সৌন্দর্যে উপভোগ করলাম। এর পর আবার রওনা দিলাম টেকেরঘাট। সন্ধ্যায় চললো আড্ডা গান আর উনো খেলা এরপর রাতের খাওয়া শেষ করে ঘুম। সকাল এ থেকে আবার শুরু হলো ঝড় এর মধ্যে আমরা তাহিরপুরের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। পথে সকালের নাস্তা সারলাম। সকাল থেকে আমার ১০৩ -১০৪ জ্বর। আসার দিন থেকে অনবরত ভেজা জামাকাপড় নিয়ে থাকার দরুন হয়তো জ্বর উঠেছে। তাই এইবার আর ভুল করলাম না তাহেরপুর বাজার থেকে রেইনকোট কিনে নিলাম। এরপর মোটর সাইকেল এর ট্যাংকি রিফুয়েল করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে রওয়ানা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। প্রায় ৮ ঘন্টা লাগলো আমাদের ৩০৮ কিলোমিটার এর দীর্ঘ রাইড শেষ করতে।সবশেষ এ রাত ৯ তাই বাসায় ফিরে শেষ হলো আমাদের ২ দিনের বৃষ্টি ভেজা টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ। সর্বমোট ৪০০০ টাকা খরচ হয়েছিল এর মধ্যে ২০০০ টাকা অকটেন আর নৌকা ভাড়া বাবদ প্রতিজন ২০০০ টাকা। আমার কে পি আর ১৫০ মোটরসাইকেল ভালোই সার্ভিস দিয়েছিলো।
সবশেষে, বলতে চাই টাঙ্গুয়ার হাওর এর রূপ বৃষ্টিতে এ শতগুন বেড়ে যায়
২৮শে অগাস্ট ২০২০, সকাল আমরা ঢাকা ইস্কাটন থেকে তিনটি মোটরবাইকে পাঁচজন রওনা দিলাম সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উদ্দেশে।
প্রায় ৩০৮ কিলোমিটারের লম্বা রাইড। তাই শুরুতে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ সরনীতে সাউদার্ন সিএনজি স্টেশন থেকে ফুল ট্যাংকি অকটেন ভরে নিলাম। এই পাম্প এর অকটেনের মান ভালো। রেস এবং ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়। যদিও কোয়ান্টিটি নিয়ে আমার একটু সন্দেহ আছে। যাই হোক, সকালে কেউ নাস্তা করিনি তাই ঠিক করলাম নরসিংদী তে নাস্তা করবো। যেতে যেতে পথে বৃষ্টি আমাদের সঙ্গী হলো। আমার কাছে রেইনকোট ছিল না তাই রাস্তার টং দোকানএ দাঁড়ালাম একটু পর বৃষ্টি থেমে গেলে। যাই হোক নরসিংদীতে একটা হোটেলএ নাস্তা করে ব্যাগগুলি প্ল্যাস্টিক দিয়ে ভালো করে মোটরসাইকেল এর সাথে বাঁধলাম। আবার চলা শুরু করলাম। এর মাঝে আমরা দুপুর খাওয়ার জন্য থামলাম। বিকাল এর দিকে ফেরি পার হলাম।
সুনামগঞ্জে ঢোকার সাথে সাথে ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো। যদিও সারা রাস্তায় বৃষ্টি একটু পর পর আমাদের সঙ্গ দিচ্ছিলো। কিন্তু তাহিরপুর এর বৃষ্টি আর রাস্তা অনেক ভাঙা একটু পর পর ভালো রাস্তা, আবার পুরাটা ভাঙা। আর বাইকের হেডলাইট এর আলোতে কাজ হচ্ছিলো না। মাঝে মাঝে বিশাল বিশাল গর্ত। আবার নেই রেইনকোট রেইন কোট নাই। তাই অবস্থা হলো যা তা।এই রকম করেই রাতে ১০ টার দিকে আমরা পোঁছে গেলাম তাহিরপুর বাজারে। ওই খানে নৌকা ঘটে আমাদের জন্য ফয়সাল ভাই অপেক্ষা করছিলেন। আমরা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন- সাবান গামছা স্যান্ডেল ইত্যাদি কিনলাম। এর পর আমরা ঘটে গেলাম। আমাদের জন্য বিশাল নৌকা অপেক্ষা করছিলো।এই নৌকায় প্রায় ৫০ জন উঠেতে পারে। ৫ জন আর নৌকার ৫ জন মিলে ১০ জন বিশাল এই নৌকায় উঠলাম।সাধারণত এই রকম নৌকার ভাড়া ১৬০০০ টাকা কিন্তু ফয়সাল ভাই আমাদের বন্ধু মানুষ তাই এই রাজকীয় ব্যবস্থা এতো কম খরচই। যাই হোক, আমরা নৌকাতে বাইক তুলে নৌকার ছাদে রাখলাম।তখন তুমুল বৃষ্টি আর থেকে থেকে ব্রজপাত হচ্ছে। আমরা সবাই কাক ভেজা তখন। তাই তাড়াতাড়ি হাওর থেকে বালতিতে পানি তুলে নৌকার ছাদেই গোসল সেরে নিলাম।এরপর হাওরের মাছ দিয়ে রাতের খাবার শেষ করলাম। আস্তে আস্তে বৃষ্টি ঝড় এর রূপ নিলো তাই আমরা ঘটে এ রাত কাটাবো সিদ্ধান্ত নিলাম। আড্ডা আর গানে ধীরে ধীরে রাত গভীর হলে আমরা ঘুম দিলাম। সকাল সকাল উঠে বারবিকিউ আর খিচুড়ি দিয়ে নাস্তা সারলাম।
এরপর আমরা টাঙ্গুয়ার হাওর এর দিকে নৌকা ছাড়লাম। মেঘালয় পাহাড় থেকে ৩০টিরও বেশি ঝরনা এসে মিশেছে এই টাঙ্গুয়ার হাওরে।
৫১টি হাওরের সমন্বয়ে ৯,৭২৭ হেক্টর এলাকা নিয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর সুনামগঞ্জ ও তাহিরপুর উপজেলার মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। এই হাওরে সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০ প্রজাতির পাখি, ২০০ প্রজাতির মাছ, ১২’র বেশি প্রজাতির ব্যাঙ, ১৫০-এর বেশি প্রজাতির সরীসৃপ প্রাণীর আবাস। নৌকায় যেতে যেতে হাওয়ের মানুষের জীবনযাত্রা দেখতে দেখতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম।
এক একটি বাড়ি যেন এক একটি দ্বীপ।যেতে যেতে লক্ষ্য করলাম যায় হাওরের প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতে কমপক্ষে একটি করে নৌকা আছে। পানিবেষ্টিত এই এলাকার এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় যাতায়াতের একমাত্র বাহন। এরপর আমার এক জায়গায় নৌকা ভিড়ালাম হাওরে গোসল করার জন্য। আমরা সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে পানিতে নামলাম।
হাওরে নামার সময় চেষ্টা করবেন লাইফ জ্যাকেট পরে নামার কারন চোৱ স্রোতে পড়তে বিপদ হতে পারে। আমরা হাওরে বসে চা খেলাম।এর মধ্যে শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি যেটা আমাদের এই অভিযানের আনন্দের মাত্রা বাড়িয়ে দিলো শতগুন। ঘন্টা দুয়েক পানিতে ঝাপাঝাপি করে আবার যাত্রা শুরু করলাম এইবার এর লক্ষ্য টেকেরঘাট। যেতে যেতে দুপুরের খাওয়া সেরে নিলাম। টেকেরঘাটে আমরা মোটরবাইক সহ নামলাম। বিকালে গেলাম বাজার দর্শনে। এর পর বিকেলে মোটরসাইল নিয়ে উঁচুনিচু পাহাড় পেরিয়ে বারিক্কাটিলার দিকে রওনা দিলাম। রাস্তা অনেক ভাঙা কিন্তু আসেপাশের দৃশ্য অসাধারণ। বিকালটা কাটালাম বারিক্কাটিলায় সেখান থেকে যাদুকাটা নদীর সৌন্দর্যে উপভোগ করলাম। এর পর আবার রওনা দিলাম টেকেরঘাট। সন্ধ্যায় চললো আড্ডা গান আর উনো খেলা এরপর রাতের খাওয়া শেষ করে ঘুম। সকাল এ থেকে আবার শুরু হলো ঝড় এর মধ্যে আমরা তাহিরপুরের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। পথে সকালের নাস্তা সারলাম।
সকাল থেকে আমার ১০৩ -১০৪ জ্বর। আসার দিন থেকে অনবরত ভেজা জামাকাপড় নিয়ে থাকার দরুন হয়তো জ্বর উঠেছে। তাই এইবার আর ভুল করলাম না তাহেরপুর বাজার থেকে রেইনকোট কিনে নিলাম। এরপর মোটর সাইকেল এর ট্যাংকি রিফুয়েল করে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বৃষ্টির মধ্যে রওয়ানা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। প্রায় ৮ ঘন্টা লাগলো আমাদের ৩০৮ কিলোমিটার এর দীর্ঘ রাইড শেষ করতে।সবশেষ এ রাত ৯ তাই বাসায় ফিরে শেষ হলো আমাদের ২ দিনের বৃষ্টি ভেজা টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ। সর্বমোট ৪০০০ টাকা খরচ হয়েছিল এর মধ্যে ২০০০ টাকা অকটেন আর নৌকা ভাড়া বাবদ প্রতিজন ২০০০ টাকা। আমার কে পি আর ১৫০ মোটরসাইকেল ভালোই সার্ভিস দিয়েছিলো।
সবশেষে, বলতে চাই টাঙ্গুয়ার হাওর এর রূপ বৃষ্টিতে এ শতগুন বেড়ে যায়
একটি আর্টিকেল লিখেছেন আপনি; সব ঘটনার চমৎকার বর্ণনা সাথে ট্যুরের ভিডিও সব মিলিয়ে বেশ মজাদার হয়েছে কিন্তু সাথে কিছু স্থির চিত্র শেয়ার করলে বিষয়টা অন্য লেভেলে চলে যেত।
I just released your post from spam quarantine. Our filter is working to protect the community and you from unwanted content, but sometimes it can be triggered by something and remove a legitimate post. Moderators are patrolling the quarantine to release the good post so, if your post has been rejected, don’t post it again. Simply tag a moderator (check here and here). For more information you can read: Why was my Connect post marked as spam?
Thanks for sharing our journey experience @piead . This kind of details journey experience will help others local guides to trip to this area. Hope you will regularly updating us like this post.