বর্ণিল বিজয়ে উদ্ভাসিত শহর ঢাকা,আলোর স্ফুরণে যেন অপূর্ব মহিমা

-আবেগ কাকে বলে জানেন?

-হু;জানি।

-চলুন আপনার জানা আপনার কাছেই থাকুক,নতুন করে আমিই বলি…

উপরের কথোপকথন টুকু হয়েছিলো আমার এক কাজিনের সাথে। এই কথোপকনের আগে যে কথা বলেছিলো আমার কাজিন তা ছিলো ঠিক এরকম—

-আরে খেয়ে দেয়ে কাজ নেই,এত রাতে বিজয় উদযাপন করছে।এই শীতে পাগলে পেলে যা হয় আরকি।ছবি তুলে আর বিল্ডিং দেখে হবেটা কি??

উনার কথার জবাবের পর ই শুরু হয়েছিলো প্রথমে দেওয়া কথোপকথন টুকু।

আমার জবাবটা ছিলো এরকম।

-ভাইজান;বিজয় আমি বুকে লালন করি।আর আমি যা করেছি রাতে ঘুরে তা ছিলো বিজয়ের ই আবেগ।বিজয়ের উল্লাসটা ভিতর থেকে আসে বলেই শীতটা কাবু করতে পারেনি।তাই এই রাতে বেরিয়ে বর্ণিল আলোয় উদ্ভাসিত বিজয়ের আনন্দ উপভোগ রত এই শহরের ইটে গাঁধা বিল্ডিং গুলো দেখতে বেরিয়েছিলাম!!

যাইহোক,এবার মূল কথায় আসি—

আমাদের দেশে বিজয় দিবস খুবই আনন্দের সাথে পালন করা হয় এটা আমরা সবাই ই জানি।তারই অংশ বিশেষ হিসেবে আলোকসজ্জায় সাজানো হয় দেশের সব গুরত্বপূর্ণ ভবন সমূহ।

আর এজন্যই রাত ১২ টার পর বের হয়েছিলাম ১৬ ই ডিসেম্বরে বের হয়ে মোটামুটি ঢাকা দক্ষিণের অনেক জায়গায় সরকারী ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ ভবন সমূহের সাজসজ্জা দেখেছি।মূলত ঢাকা শহরকে আমরা সবসময় যেভাবে পাই জ্যাম,দূষণ,কোলাহল,মানুষের গাঁদাগাঁদি ইত্যাদির বাইরে পাবেন এক নতুন ঢাকাকে।আলোর স্ফুরণ যেনও ঠিকরে বের হচ্ছিলো।সব ভবন গুলো যেনও আস্ফালন করছিলো বিজয়ের স্বাদ!!

যদি কেউ আমাকে বলে তখন আমার অনুভূতি কেমন ছিলো?

তখন প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই উত্তর হবে—

চমৎকার!! :innocent:

তো?

দেখেছি চোখের দেখা। সাধারণত আমি কোথাও যদি ঘুরি তখন যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করি কৃত্রিমতা বর্জন করতে। এজন্য চোখ দিয়ে দেখি আর বুক ভরে নেই।কিন্তু কানেক্ট ফোরামে লিখতে হবে ভেবে অনেকগুলো ভবনের ছবি তুলেছি।ক্যামেরা ইুকইপমেন্ট সাথে নেই নি ঝামেলা হবে বলে।তাই হাতের মোবাইলটাকেই সম্বল করে কিছু ছবি তুলেছি।

তো দেখা যাক কিছু ছবি,আর ছবির নিয়ে ছোট কিছু বর্ণণা—

[ছবি: আলোয় রাঙা রাতের শাপলা চত্বর]

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক এলাকা মতিঝিল।আর মতিঝিল বিজয়ের আমেজে সেজেছে এমন ভাবে দেখে মনে হবে বিয়ে বাড়ি হয়ে আছে পুরো এরিয়া।আলোয় আলোয় ভরপুর হয়ে আছে চারপাশ।মোটামুটি সবগুলো ব্যাংক ই তাদের ভবন গুলি খুব সুন্দর ভাবে সাজানোর চেষ্টা করেছে সর্বোচ্চ।

[ছবি: সুপ্রিম কোর্ট ভবন,লাল-সবুজে]

দূর থেকে তোলা বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট ভবন।দেখলে অদ্ভুত ভালো কাজ করবেই।দূর থেকে ঝাপসা চোখে তাকালে মনে হবে যেন আপনি লাল সবুজের পতাকা দেখছেন।ভালো লাগা হয়ত একেই বলে।আর এই ভালোলাগার আবেগটাই হয়ত বিজয়ের উদযাপন। যা আমরা এখন গান-বাজনায় সীমাবদ্ধ করে ফেলতে চাইছি।

[ছবি:সগৌরভে দাঁড়িয়ে থাকা কার্জন হল]

কার্জন হলকে অদ্ভুত ভাবে সাজানো হয়েছে।এত আলোর ফুলঝুরিতে উদ্ভাসিত ছিলো এই এলাকা মনে হচ্ছিলো কোন এক আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠেছে সবকিছু!!

[ছবি: নগর ভবন,মূল গেট থেকে তোলা]

নগর ভবনের আলো চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে।নগর ভবন যেনও আলোর দূতি ছড়িয়ে দিচ্ছে একবারে পুরো এলাকা জুড়ে।ওখানকার দৃষ্টিনন্দন গাছপালা যেনও জীবন্ত হয়ে উঠেছিলো।অনেক মানুষের সমাগম দেখে এত রাতে অবাক ই হয়েছিলাম।

[ছবি:দূর থেকে তোলা নগর ভবন]

ছবিটি দিকে ঝাপসা চোখে তাকালেই লাল সবুজের পতাকা চোখে ভেসে উঠে।খুব ভালো লেগেছিলো এখানে।

[ছবি:পূবালী ব্যাংক ভবন]

স্মৃতিসৌধকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা।এখানেও অনেক মানুষের সমাগম ঘটেছিলো।ভালো লাগবে ই এমন পরিবেশে।

[ছবি:বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক]

জাতীয় পতাকার অনুপাত ঠিক না থাকলেই দেখতে ভালো দেখাচ্ছিলো।সুন্দর একেই বলে!!

এখানে মানুষের সমাগম কম ছিলো অবশ্য।আলোকসজ্জা খারাপ হয়নি অবশ্য।

[ছবি:নগর ভবন ও জনতা ব্যাংক]

প্রতিটি ছবির ই আলোকসজ্জা ছিলো চোখ ধাঁধানো।এবার সিরিয়ালে কয়েকটি ছবি ক্যাপশন সহ দিচ্ছি।

[ছবি:সোনালী ব্যাংক ভবন]

[ছবি:NCC ও আল আরাফাহ ব্যাংক]

[ছবি:পুলিশ হেডকোয়ার্টার ও সচিবালয়]

[ছবি:মৎস্য ভবন ও বাংলা একাডেমি]

[ছবি:দূর থেকে তোলা মতিঝিলের ব্যাংকগুলো]

[ছবি:জাতীয় সংসদ,©Google]

সময়ের কারণে জাতীয় সংসদ ভবন দেখতে যেতে পারিনি। তবে যাবো কারণ পুরো মাস জুড়ে সাজানো থাকবে তখন ছবি আপডেট করব।এই ছবিটি গুগল করে নেওয়া।

ছবি প্রায় ৮৬ টি তোলা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ভবন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের।সবগুলো আপলোড করা সম্ভব নয় তাই কিছু কলেজ করে দিয়েছি।এর বাইরে যেগুলো সুন্দর সেগুলো ই বাচাই করে দিয়েছি।

যা স্কিপ করেছি—

  • মোবাইল দিয়ে তোলা ছবিগুলো, Device- Xiaomi K20 ও Note 5 pro
  • বাইকে করে এলাকাগুলো ঘুরে বেড়িয়েছি।সাথে ছিলো আমার ভাইয়া।
  • পল্টন,মতিঝিল,কাকরাইল,শাহবাগ,গুলিস্তান,ফকিরাপুল,আরামবাগ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু অংশ,ফুলবাড়িয়া,পুরান ঢাকার কিছু অংশ (খেয়েছিলাম ওখানে নান্না বিরিয়ানি)ইত্যাদি আরও কিছু এলাকা।

মনে হয় পুরো মাস ুজুড়ে এরকম সাজানো থাকবে।তাই আপনি ও রাতে বেরিয়ে পড়ে গিয়ে দেখতে পারেন।কিভাবে আমরা উদাযাপন করি বিজয়।কিভাবে সেজেছিলো এই শহর ঢাকা!!

শেষ কিছু কথা—

বিজয়ের আনন্দ শুধু সাজসজ্জাতে নয়।সাজসজ্জা তো বাহ্যিকতা।বিজয় লালন করতে হয় বুকে।বিজয়েন স্বাদ আস্ফালন শুধু নির্দিষ্ট দিনে নয়।করতে হবে বছরের প্রতিটি দিন।আর বিজয় গাঁথা বুকে রেখে এরকম আলোকিত শহরের মত মনকে আলোকিত করে মনের মাঝে দেশকে ঠাঁই দিতে হবে।নিজ নিজ অবস্থানে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে বহুদূর।তাহলেই সার্থক হবে এই বিজয়।সার্থক হবে লক্ষ লক্ষ শহিদের প্রাণ।

শাহাদাত হোসেন

১৭.১২.১৯

31 Likes

শেষের কথাটা ভাল বলেছেন @shahadat99 ভাই

10 Likes

ঝলমল করে শহর
ভেদ করে কালো ছায়া
যত দেখি তত লাগে মায়া

ধন্যবাদ আপনাকে @shahadat99 বর্ণিল এই শহর বিশ্ববাসীকে দেখানোর জন্য

10 Likes

@shahadat99 ছবিগুলো সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে। আলো ঝলমল। এরকম আলোকিত ছবি দেখলে মনও আলোয় ভরে যায়। বিজয় দিবসের সুন্দর ছবিগুলোর জন্য অনেক ধন্যবাদ।

9 Likes

অসাধারণ লেগেছে @shahadat99 ভাইয়া, :bangladesh: :blue_heart:

6 Likes

সত্যি অসাধারণ ছবি । আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। @shahadat99 আমাদের দেশ,কে রঙ্গিন রুপে তুলে ধরার জন্য।

9 Likes

ছবি কথা বলে। অসাধারণ ভাই!

6 Likes

আমি যখন এই মন্তব্য লিখছি, ঠিক তখন ভোর ৫:৩০ মি. প্রায়। ঢাকার বাইরে যাচ্ছি তাই গাড়িতে ঘুমাচ্ছিলাম, হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। তো একটু ফোনটা হাতে নিতেই আপনার এই পোষ্ট চোখে পরলো তাই পড়ে ফেললাম, শুধু পড়িইনি, ছবিগুলোও দেখেছি খুব ভালো করে।

আপনার লেখা অসাধারণ ও ছবি গুলোও খুবই সুন্দর।

@shahadat99 অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য এবং এক অন্যরকম রঙিন বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরার জন্য।

17 Likes

@shahadat99 bhai about 9:30 p.m. I was there Nagar Bhaban area. That’s day was great. Those who did not see the color of victor, they did mott immigration what’s they missed. Your photo was great & thanks for sharing your experience of victory day & written post experience.

8 Likes

GOOD WRITING @shahadat99

2 Likes

হাতের মোবাইলের রেজ্যুলেশন ভাল আছে। লেখার হাতটাও ভাল। চালিয়ে যান। আল্লাহ ভরসা।

1 Like