আসসালামুয়ালাইকুম
আমাদের সবুজ শ্যামল এই বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। 6 টি ঋতু নিয়ে আমাদের বাংলাদেশে গঠিত। বাংলাদেশের ষড়ঋতুর পঞ্চম ঋতু হচ্ছে শীত। শীত হচ্ছে গ্রীষ্ম এর ঠিক বিপরীত ঋতু। বাংলা মাসের পৌষ মাঘ এই দুই মাস হচ্ছে শীতকাল।ইংরেজি ক্যালেন্ডার এর নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূলত বেশি শীত হয়ে থাকে। তবে নভেম্বর থেকেই হালকা শীত অনুভব হয়। শহরের তুলনায় গ্রামে শীতের আমেজ টা বেশি বুঝা যায়।
শীত মানে হচ্ছে এক অন্যরকম অনুভূতি, শীত মানে কুয়াশা ঘেরা চারপাশ, শীত মানেই ভোরের শিশির ভেজা ঘাস, শীত মানে কুয়াশার চাদর মোড়ানো সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ। শীতকাল আসলেই প্রথমে যে জিনিষটি কথা খুব মনে পড়ে সেটি হচ্ছে খেজুরের রস ও ভাপা পিঠা। আমরা যারা মূলত গ্রামে বড় হয়েছি তারা এই দুটি খাবারের সাথে অতপ্রত ভাবে পরিচিত।
শীতকাল শুরু হওয়ার সাথে সাথেই গ্রামের বৈচিত্র্যময় পরিবেশ চেঞ্জ হতে থাকে সাথে সাথে খাবার ও কিছুটা পরিবর্তন আসে। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা হয় বিভিন্ন প্রকার খাবার। এছাড়াও আরেকটি শীতকালীন খাবার হচ্ছে ভাপা পিঠা।
যখনই শীত শুরু হয় তখন থেকেই ভাপা পিঠা খাওয়ার ইচ্ছে জাগে। আজকে আপনাদের সাথে কথা বলবো শীতকালীন একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার ভাপা পিঠা নিয়ে।
প্রধানত শীত মৌসুমে প্রস্তুত ও খাওয়া হয় এই খাবারটি। এটি প্রধানত চালের গুঁড়া দিয়ে জলীয় বাষ্পের আঁচে তৈরী করা হয়। মিষ্টি করার জন্য দেয়া হয় গুড়। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য নারকেলের শাঁস দেয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে এটি একটি গ্রামীণ নাশতা হলেও বিংশ শতকের শেষভাগে প্রধানত শহরে আসা গ্রামীন মানুষদের খাদ্য হিসাবে এটি শহরে বহুল প্রচলিত হয়েছে। রাস্তাঘাটে এমনকী রেস্তরাঁতে আজকাল ভাঁপা পিঠা পাওয়া যায়।
তো চলুন দেখে নেওয়া যাক কিভাবে তৈরি করা হয় এই সুস্বাদু শীতকালীন খাবার।
উপকরণ:
১/চালের গুঁড়ো
২/গুড় মিঠাই বা চিনি
৩/নারিকেল
৪/লবণ
এছাড়াও রান্না করার জন্য পাতিলসহ যা যা লাগে।
প্রস্তুতি:
প্রথমে চালের গুঁড়ো ডেকি অথবা মেশিন ধারা গুরো করে নিতে হবে এরপর চালের গুঁড়ো এর পরিমাণ দেখে সেই অনুযায়ী মিঠাই নিতে হবে। একটি বলের ভিতরে চালের গুঁড়ো মিঠাই পরিমাণমতো লবণ ও পানি দিয়ে সবগুলোকে একসাথে মিশ্রণ করে নিতে হবে।এরপর নারিকেলের চাঁছা ও গুড় মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে শুকনা করে পাকিয়ে নিতে হবে।
এরপর একটি বড় পাতিলে বেশি করে পানি নিয়ে চুলার উপরে বসিয়ে দিতে হবে। পাতিলের মুখে ছিদ্র করা একটি ঢাকনা দিয়ে পাতিলের চারপাশ বন্ধ করে দিতে হবে যাতে করে ভিতরের বাষ্প ছিদ্র ছাড়া অন্য কোন জায়গা দিয়ে বের হতে না পারে। তারপর ছোট কোন পাত্রে মিশ্রণ করা চালের গুঁড়ো ও অন্যান্য যা রয়েছে সেগুলো সেই পাত্রে নিয়ে জাল বা বাষ্প ভিতরে প্রবেশ করতে পারে এমন কোনো কাপড় দিয়ে পাত্রটি মুড়িয়ে নিতে হবে।এরপর সে পাত্রটি পাতিলের ঢাকনা উপরে ছিদ্র বরাবর বসিয়ে দিতে হবে যাতে করে ভিতরের বাষ্প টা সরাসরি পাত্রের মধ্যে থাকা আইটেমগুলোর ভিতরে প্রবেশ করতে পারে। ভাপা পিঠা মূলত জলের বাষ্প দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। কিছুক্ষণ রাখার পর ঢাকনা থেকে পাত্রটি তুলে অন্য কোন পাত্রে পিঠা ডেলে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে গরম গরম ভাপা পিঠা।
নভেম্বর মাস শুরু হয়ে গিয়েছে শহরের ছোট বড় সকল গলিতেই দেখা মিলবে এই পিঠার দোকান.বাজার মুল্য ৫ টাকা থেকে শুরু। শীতকালীন পিঠা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যাবে। তো চলুন শুরু করে দেই এ বছরের প্রথম শীতের সকাল ভাপা পিঠার মধ্য দিয়ে -
আল্লাহ হাফেজ সবাই ভাল থাকবেন পরবর্তী কোন খাবার অথবা ভ্রমণ গল্প নিয়ে হাজির হব আপনাদের সামনে।