নিউ ইয়র্ক এমন একটি শহর যা কখনই ঘুমায় না। হ্যা, আপানদের আজ সেই শহরে কাটানো আমার কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে ২০১৯ সালের ২৩শে সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্ক গিয়েছিলাম, TheirWorld এর একজন গ্লোবাল ইয়ুথ এম্বেসেডর হিসেবে।
কাতার এয়ারওয়েজে এটা আমার প্রথম ভ্রমন ছিল। কুয়ালালুমপুর থেকে দোহা হয়ে আমাকে নিউ ইয়র্ক যেতে হবে, ট্রানজিটের সময় ছাড়াই আমাকে বিমানে থাকতে হবে প্রায় ২১ ঘন্টা, তাই আগে থেকে নিজেকে মানসিক ভাবে প্রস্তুত করে নিয়ে ছিলাম। যদিও এর আগে লোকাল গাইডস সামিটে যোগ দিতে কুয়ালালুমপুর থেকে সেনফ্রান্সিসকো এর ভ্রামন ছিল প্রায় ২৭ ঘন্টা। কাতার এয়ারওয়েজ এর সেবার মান অনেক ভাল ছিল। আমি রেটিং এ তাদের ৫ এ ৫ দিব। প্রায় ৭ ঘন্টা ৩০ মিনিট পর দোহা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পোঁছালাম। অসাধারন একটি বমান বন্দর। ট্রানজিটের পুরু সময়টা বিমানবন্দরটি ঘুরে ঘুরে দেখলাম।
দোহা থেকে ১৩ ঘন্টা ৪৫ মিনিট বিমান ভ্রমন শেষে JFK বিমান বন্দরে পোঁছালাম। ইমিগ্রেশনের কাজ খুব দ্রুত হয়ে গেল, যেহেতু আমি UNGA এর জন্য ভ্রমন করছিলাম। TheirWord থেকে আমাকে রিসিভ করার জন্য আগে থেকেই লাওরা ও সারা অপেক্ষা করছিল। ইতোমধ্যে ওয়ানজা (কেনিয়া) আমাদের সাথে যোগ দিল। আমরা হোটেলের উদ্দেশে রওনা দিলাম আর গাড়ির জানালা দিয়ে আমি নিউ ইয়র্ক সিটি দেখছিলাম।
TheirWold আমি ছাড়া আরও দুই জন গ্লোবাল ইয়ুথ এম্বেসেডরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। আমি, ওয়ানজা (কেনিয়া) আর জাভিতা (নিউ ইয়র্ক) আমরা তিনজনেই অল্পতেই ভাল বন্ধু হয়ে যাই। জাভিতার সাথে আমার আগে থেকেই পরিচয় ছিল। আমরা ভাল বন্ধুও।
জাতিসংঘের হেড অফিসের পাশেই আমার হোটেল থাকায় সিকিউরিটি অনেক ছিল। হিলটন গার্ডেন ইন হোটেলে আমি ছিলাম।
জাতিসংঘের হেড অফিস ও জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের এর অভিজ্ঞতা আরেকদিন শেয়ার করব।
আমিও বরাবরের মত ওয়ানজা আর জাভিতা এর সাথে লোকাল গাইডস প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা করি। ওরা দুই জনের খুব আগ্রহ প্রকাশ করে লোকাল গাইডস নিয়ে। আমরা তিনজন চটকরে একদিন নিউ ইয়র্ক এক্সপ্লোর করার জন্য ঠিক করলাম। জাভিতা যেহেতু নিউ ইয়র্ক এ বসবাস করে তাই সেই আমাদের লোকাল গাইডসের ভূমিকা পালন করে।
আমরা ছিলাম হিলটন গার্ডেন ইন হোটেলে। আমাদের হোটেলের পাশেই Lexington Av-53 St
সাবওয়ে (ট্রেন স্টেশন) ছিল। আমরা সকাল সকাল সাবওয়ে তে চলে গেলাম, গন্তব্য টাইম স্কয়ার। আমরা ট্রেনে করে 42 St-Port Authority Subway Station এ গিয়ে নামলাম। সাবওয়ে থেকে নেমে প্রথমে কিছু খেয়ে নিলা। যদিও আমারা স্টিট ফুড খেতে চাচ্ছিলাম কিন্তু হালাল না থাকায় বাধ্যহয়ে আমরা একটা সুপারশপে গেলাম।
আমারা টাইম স্কয়ারের দিকে হেটে যাচ্ছিলাম আর আমরা ছবি তুলছিলাম। যে জায়গা গুলো আগে ছবি বা ভিডিও তে দেখাতাম, সে জায়গা গুলোতে হাটছিলাম আর খুব এক্সাইটেড ছিলাম যা লিখে বুঝাতে পারব না।
যে সকল জায়গা ভিজিট করেছি তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে-
Harry Potter Play: https://goo.gl/maps/SSKjmx8gpJMDcAXb6
Ripley’s Believe It or Not! Times Square: https://goo.gl/maps/m5BqYvU6yYBQmQ3W8
Aladdin the Musical: https://goo.gl/maps/J7MNxXv3yWTjPfTk8
Disney Store https://goo.gl/maps/7J1i48D6hwUSzFKw5
Times Square https://goo.gl/maps/1pEK2jBn9YySrMyHA
আমরা হেটে হেটে টাইম স্কয়ারের পুরু এলাকাটা ঘুরে বেরালাম এবং প্রচুর শপিং ও মজা করলাম। বিকালে আমাদের আরেকটা মিটিং থাকায় দুপুরের মধ্যে আমাদের এক্সপ্লোর করা শেষ করলাম। আমরা ফ্রি লাইভ সঙ্গীত উপভোগ করলাম।
এতো বেশি ছবি তুলেছি যে যা একটা পোষ্ট এ শেয়ার করা কঠিন। পোষ্টের শেষে দেয়া ফটো এ্যালবামটা ঘুরে দেখতে পারেন।
রাতে আবার বের হলাম রাতের নিউ ইয়র্ক দেখব বলে। আমরা আবার টাইম স্কয়ারে আসলাম। টাইম স্কয়ার এ রাতের সুন্দর্য উপভোগ করে এবার হোটেল ফেরার পালা। রাতেও আলোতে মনেই হচ্ছিলনা যা এখন অনেক রাত। তাইতো নিউ ইয়র্ক শহকে বলা হয়, যে শহর কখনও ঘুমায় না।
হোটেল গিয়েই কল দিলাম এক বন্ধুকে বাংলাদেশি খাবার খাব। অল্প সময়ের মধ্যেই সে গাড়ি নিয়ে আমার হোটেলের সামনে চলে আসল। আমরা ওয়াল্ড ট্রেন সেন্টার হয়ে বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট Curry In a Hurry তে গেলাম মাঝ রাতে।
সারা রাত নিউ ইয়র্ক এর বিভিন্ন জায়গা ঘুরে শেষ রাতে হোটেল এ আসলাম, কারন বিকালের ফ্লাইটে করে মালয়শিয়াতে আসতে হবে। যে দিন মালয়েশিয়া আসব সেই দিন ছিল শুক্রবার। তাই চট করে গুগল ম্যপ্সে কাছাকাছি মসজিদ দেখে জুম্মার নামাজটা আদায় করে নিলাম।
এই বার যাত্রা এয়ারপোর্ট, আবার সেই প্রায় ২১ ঘন্টা বিমান ভ্রমন। নিজেকে মানসিক ভাবে তৈরি করে সবাই ছুটলাম বিমানবন্দরের দিকে। সেই গল্প না হয়ে আরেক পোষ্টে শেয়ার করব।
খুব ইচ্ছে ছিল গুগল লোকাল গাইডসের টিমের সাথে গুগল নিউ ইয়র্ক অফিসে গিয়ে দেখা করার। UNGA এর খুব ব্যাস্ত শিডিউল থাকায় আর হয়ে উঠেনি। ইনশাআল্লাহ, পরেরবার আসলে অবশ্যই একটা মিটাআপ করে যাব।
Google Photos Album : https://photos.app.goo.gl/STxKDhFZ6UidHS7L9
আপনার নিউ ইয়র্ক ভ্রমনের কোন অভিজ্ঞতা থাকলে কমেন্টসে শেয়ার করতে ভুলবেন না।