প্রকৃতি বরাবরই তার অপার সুন্দরযে সকলকে অভিভূত করে।পাহাড়েরে গা বেয়ে বয়ে যাওয়া জলের ধারার ছন্দময় শব্দে এক ধরনের মোহ আছে । আর বৃষ্টি পরবর্তী সময় এই সৌন্দর্য যেন পূর্ণটা পায়। ঝর্ণা আর জলপ্রপাত দুটি শব্দ যেন এক অন্যের পরিপুরক কিন্তু দুইয়ের মধ্যে রয়েছে পার্থক্য।
তবে পার্থক্য টা কি উচ্চতায়?
বিশালতায়?
নাকি স্রোতের তীব্রতায়?
২০১০ সালে সরকার বারৈয়াঢালা থেকে কুণ্ডের হাট ব্লক পর্যন্ত প্রায় ২৯৩৪ হেক্টর পাহাড়ি জঙ্গল জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। খৈয়াছড়া ঝর্ণা এই জাতীয় বারৈয়াঢালা উদ্যানের আওতাভুক্ত। এই উদ্যানে বেশ কয়েকটি ট্রেইল আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ট্রেইল খৈয়াছড়া। কিভাবে যাবেনঃ ঢাকাসহ বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে খৈয়াছড়ায় আসা যায়। ঢাকা বাস কাউন্টার থেকে চট্রগ্রামগামী বাস সার্ভিসে উঠে মিরসরাই থানা পার হয়ে বড়তাকিয়া বাজার নামতে হবে। নন এসি ও এসি বাসের ভাড়া যথাক্রমে ৫০০ থেকে ১৩০০ টাকার মধ্যে। সময় লাগে ৪-৫ ঘন্টার মত।এছাড়া ট্রেনে করে ফেনী বা চট্রগ্রাম নেমেও আসা যায়। আর চট্টগ্রাম থেকে আসতে হলে একেখান মোড় থেকে চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ক গামী বিভিন্ন লোকাল বাসে পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম শহরের থেকে বড়তাকিয়া দূরর্ত ৬০ কিলোমিটার। ভাড়া নিবে ৫০ থেকে ৮০ টাকা আর সময় লাগবে প্রায় ৫০ মিনিটের মত।
খৈয়াছড়া ঝর্ণার মোট ৯টি মূল ধাপ এবং অনেক গুলো ছোট ছোট বিচ্ছিন্ন ধাপ তা বাংলাদেশের কোন ঝর্ণাতে এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। তাই, খৈয়াছড়াকে বলা হয় বাংলাদেশের “ঝর্ণা রানী”। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ৫ বছরে ১১ জন পর্যটক নিহত ও শতাধিক পর্যটক আহত হয়েছেন।তবে একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। কোথায় থাকবেন? থাকার জন্য খৈয়াছড়া বা বড়তাকিয়া বাজারে কোনো আবাসিক হোটেল নেই। তবে নিকটস্থ থাকার হোটেলর জন্য আপনাকে যেতে হবে সীতাকুণ্ড বাজারে । সীতাকুণ্ড পৌরসভায় মোটামোটি মানের কিছু আবাসিক হোটেল আছে।এছাড়া আপনি চাইলে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে থাকতে পারেন। এই ট্রেইলটি শেষ করতে মোট ৬ থেকে ৮ ঘন্টা সময় লাগে।চাইলে রাতে তাঁবু নিয়ে ক্যাম্পিং ও করতে পারবেন।যদি দুইদিনের সময় নিয়ে যান তবে এইখানের আশেপাশে আর কিছু ট্রেইল এ যেতে পারবেন।
খরচ কেমন হবে? তেমন বড় কোন খরচ নেই।জনপ্রতি সর্বমোট খরচ ১০০০ টাকা থেকে ৩০০০ পর্যন্ত হতে পারে।
ঝর্ণার পানি বেশ ঠান্ডা।চারপাশের অসাধারণ মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য পর্যটকদের আগমন বাড়ার পর ঝর্ণাগুলোর ঝিরিপথ ক্রমশ নোংরা হয়ে যাচ্ছে।যেখানে সেখানে ময়লা, প্লাস্টিক এর বোতল ইত্যাদি ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে।প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এই জায়গাগুলো আমাদের সকলের সহযোগিতা ছাড়া তার আসল রূপ ধরে রাখতে ব্যর্থ হবে।