হ্যালো লোকাল গাইডগণ,
আপনাদের সবাইকে জানাই বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর প্রাণঢালা শুভেচ্ছা।
বাংলা নববর্ষ, যেটা আমরা পহেলা বৈশাখ নামে চিনি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষজন অনেক উৎসাহ ও আনন্দের মধ্য দিয়ে পালন করে থাকেন। এই দিনটিকে ঘিরে দেশের নানা প্রান্তে দেখা যায় নানা আয়োজন—কোথাও বৈশাখি মেলা, কোথাও যাত্রা পালা, কোথাও দেশীয় খেলা কিংবা সংগীতানুষ্ঠান। অঞ্চলভেদে এই উৎসবের রূপ বদলালেও, আনন্দটা সবার মাঝে এক।
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস ও গুরুত্ব নিয়ে আমাদের প্রিয় @Designer_Biswajit দাদা দারুণ একটি লেখা লিখেছেন। আগ্রহীরা চাইলে সে পোস্টটি পড়ে নিতে পারেন - Barshabaran-festival a Festival Where Combinedly Represent Bengali Tradition and Culture
এই পোস্টে আমি শেয়ার করছি পহেলা বৈশাখ আমার অভিজ্ঞতার কথা
শহরের বৈশাখ এখন অনেকটাই কমার্শিয়াল হয়ে গেছে, কিন্তু গ্রামে এখনো সেই পুরোনো রূপটা টিকে আছে—সেই সাদামাটা, প্রাণবন্ত বৈশাখ!
আমাদের বাড়ির পাশে ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে দত্তের বাজারে প্রতিবছর বসে বৈশাখি মেলা। আর এই দিনটিতেই নদীর খেয়াঘাটে ও বাজারের বড় বড় দোকানগুলোতে হয় হালখাতা। দোকান ও নদীর পাড়ে রঙিন কাগজে সাজানো হয় গেইট, কোথাও লাল-সাদা আলপনা, সবমিলিয়ে এক অন্যরকম উৎসবের আবহ।
এই মেলাকে ঘিরে বাজারের একেক প্রান্তে বসে একেক ধরনের স্টল—
কোথাও ঘুড়ির সারি,
কোথাও মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল,
আবার কোথাও বাঁশ ও কাঠের তৈরি খেলনা বা গৃহস্থালি সামগ্রী,
আর খাবারের জায়গায় থাকে জিলাপি, মুড়ি, চটপটি, তরমুজসহ নানা কিছু।
দূরদূরান্ত থেকে লোকজন আসে এই মেলায়—শুধু কেনাকাটা বা ঘোরাঘুরির জন্য নয়, বরং মিলেমিশে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার জন্য!
আমাদের প্রস্তুতিও শুরু হয় আগেভাগেই—
বাড়িঘর পরিষ্কার করা, আগের দিন নানা শাক কুড়িয়ে একসাথে রান্না করে খাওয়া, আর মেলার জন্য সাদা রঙের নতুন জামা তো থাকেই।
ছোটবেলায় পহেলা বৈশাখ মানেই ছিল ঘুড়ির দিন!
মেলার সকালেই ছুটে যেতাম ঘুড়ি কিনতে—ভালো মানের সুতা আর রঙিন একখানা বড় ঘুড়ি কিনেই ফিরতাম বাড়ি।
তারপর বাবার আনা তরমুজ, জিলাপি আর মুড়ি খেয়ে ছুটতাম মাঠে—সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত ঘুড়ি ওড়ানো।
আর যদি কখনো ঘুড়ি গাছের ডালে বা বিদ্যুতের তারে আটকে যেত, তাহলে মন ভেঙে যেত একেবারে! তখন বাবার কাছে বায়না—আরেকটা ঘুড়ি চাই!
সেই সময়টা এখনো মনে পড়ে, খুব মিস করি।
এখনো আমরা পহেলা বৈশাখে বাইরে যাই, খাওয়া-দাওয়া হয়, ছবি তুলি, কিন্তু সেই ছোটবেলার মতো ঘুড়ি নিয়ে দৌড়ানো হয় না আর!
বয়স বাড়লেও, মনটা মাঝে মাঝে এখনো ছুটে যায় সেই বৈশাখি মেলার মাঠে।
এই বৈশাখ সবার কেমন কাটলো জানাতে ভুলবেন না কিন্তু।
ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য।
#bdlg, #bangladeshlocalguides, #localguidesbd, #happybengalinewyear