সোমেশ্বরী নদীর অপরূপ সৌন্দর্য
সবাই চায় ভ্রমণ তালিকায় নতুন কিছু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করার। আমিও তাদের ব্যতিক্রম নয়। তাই ভ্রমন তালিকায় যুক্ত করলাম নেত্রকোনার সুসং দুর্গাপুরকে।
একদিন সন্ধ্যায় হটাৎ করেই বন্ধুরা মিলে প্ল্যান করলাম ট্যুরে যাব। জায়গা নির্বাচন করা হলো নেত্রকোণার বিরিশিরি । সিদ্ধান্ত হলো পরের দিন ভোরেই বাইকে রওনা হবো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভোর ৫:৪০ টায় গাজীপুরের মাওনা থেকে আমরা ৬জন বিরিশিরির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করি।
আমরা ৬ জন
২টি হাইওয়ে বিরতি দিয়ে সোমেশ্বরী নদীতে গিয়ে পৌছাই ৯:৩০ টায়। উত্তর আকাশ তখন মেঘে অন্ধকার হয়ে আসছিলো। তাই আমারা সেখানে বেশিক্ষণ দেরি না করে অস্থায়ী বাঁশের সাকো দিয়ে অপর পাশে চলে গেলাম। খরচ দিতে হলো জনপ্রতি ১০ টাকা এবং বাইক প্রতি ২০ টাকা।
সোমেশ্বরী নদীতে নির্মিত অস্থায়ী বাঁশের সাকো
সেখান থেকে রাশমণি বাজারে পৌছানোর সাথে সাথেই শুরু হয় বজ্রসহ ভারী বৃষ্টি।
বৃষ্টি চলাকালীন সময়েই হোটেলে পরটা-ডিম দিয়ে সকালের নাস্তা সেরে নেই। ততক্ষণে বৃষ্টি থেমে গেছে।
বৃষ্টিতে বাজারের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে
নাস্তা শেষে প্রথমেই গেলাম চিনা মাটির পাহাড়ে।
চিনামাটির পাহাড়
সেখানে নির্মল পরিবেশের সাথে চমৎকার সৌন্দর্য উপভোগ করার পর চলে যাই উপজাতিদের পল্লীতে। বাইক নিয়ে যাওয়াতে অনেকটা ভেতরে প্রবেশ করতে পেরেছিলাম।
উপজাতিদের বাড়ি
সময় তখন দুপুর ১:০০টা। দোকান থেকে সকলেই চা বিস্কুট খেয়ে চলে গেলাম বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্পে। সেখানে সোমেশ্বরী নদীতে কিছুক্ষণ সময় কাটালাম এবং কেনাকাটা করলাম। এখানের বিশেষত্ব হলো এখানে প্রচুর পরিমাণ ভারতীয় পণ্য পাওয়া যায়। বিশেষকরে কসমেটিকস সামগ্রী।
পাশেই ছিলো কমলা পাহাড়। চলে গেলাম কমলা পাহাড়ে। যদিও কমলা পাহাড়ে একটি কমলা গাছও আমার চোখে পরেনি। পুরোটা জুড়েই ছিলো শুধু পাম গাছ। কয়েকটি পাম গাছে দেখলাম অনেকেই অনেক স্মৃতি রেখে গেছে।
রেখে যাওয়া স্মৃতি
এবার ফেরার পালা। খাবার খেয়ে বিকেল ৫ টার দিকে আমার বাড়ির উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করি। শ্যামগঞ্জে হাইওয়ে বিরতি দিয়ে রাত ৮:৩০ টায় বাড়ি পৌছাই।
সবশেষে বলব দূর্গাপুরের নির্মল পরিবেশ, অপরূপ সৌন্দর্য্য, সোমেশ্বরী নদীতে নৌকা ভ্রমণ সবকিছুই স্মরণীয় হয়ে থাকার মত।
★★★ বর্ষাকালে নেত্রকোণার রাস্তাঘাট কিছুটা ঝুকিপূর্ণ।
বাইকে গেলে ময়মনসিংহ পার হয়ে গতি কন্ট্রোলে রাখবেন এবং ব্রেক করার ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। ভাঙা রাস্তা এবং রাস্তার বালু অনেক ঝুকিপূর্ণ।