প্রকৃতির রূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি, কারুকার্যে কংক্রিটের শৈল্পিক রূপময় ঐতিহাসিক নিদর্শনের ভবনগুলো নতুনত্বের ছোঁয়ায় সজ্জিত বাংলাদেশের ৩য় প্রাচীনতম কলেজ রাজশাহী কলেজ।
সকালবেলা শিশিরে ভেজা আর ঘন কুয়াশা চাদরে আবৃত শীতের ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য থাকে দেখার মতো। শীতের সকালে খোলা মাঠের উপর শিশিরে সিক্ত ঘাস গুলোর নুয়ে পড়ার দৃশ্য যে শিল্পীর রং-তুলি দিয়ে আঁকা ছবিকে হার মানাবে নিঃসন্দেহে।
১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে কলেজটির কার্যক্রম। রাজশাহী কলেজ হয়ে ওঠে শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র, যা বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় রয়েছে অভূতপূর্ব সাফল্য। ১৮২৮ সালে বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় আধুনিক শিক্ষার ইতিহাসে পথপ্রদর্শক হয়ে উঠেছিল। সেদিনের সে ক্ষুদ্র ‘বাউলিয়া ইংলিশ স্কুল’ ১৮৩৬ সালে প্রাদেশিক সরকার জাতীয়করণ করলে এ স্কুলটি রাজশাহী জিলা (বা জেলা) স্কুল, ধারাবাহিকতায় ১৮৭৩ সালে জেলা স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিক কলেজের মর্যাদা দেয়া হয় এবং একই বছর ৫ জন হিন্দু ও ১ জন মুসলমান ছাত্রসহ মাত্র ছয় জন ছাত্র নিয়ে যাত্রা শুরু। বর্তমানে কলেজটিতে ৩২,০০০+ হাজার এরও অধিক শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
যে কলেজে শিক্ষার্থীরা শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয় রয়েছে নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম এর সঙ্গে সংযুক্ত। যা শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি মেধা-মনন বিকাশে যুগ উপযোগী ভাবনায় সঠিক নেতৃত্বের গুণাবলীতে রূপান্তরিত করে এইসব সৃজনশীল প্ল্যাটফর্ম যে কলেজটিতে রয়েছে প্রায় (৪৮+) আটচল্লিশটির অধিক এমন কিছু সৃজনশীল সহশিক্ষা কার্যক্রম যার সাথে যুক্ত রয়েছে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
বর্তমান কলেজের এমন সৌন্দর্যে মুগ্ধতায় পূর্ণতা দিয়েছেন যার আধুনিকায়ন এই অবস্থান দাঁড়িয়ে আছে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ন্যায়পরায়ণতা কর্মচঞ্চলময় রাজশাহী কলেজের মান্যবর (সাবেক) অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শিক্ষক প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমান স্যার, বলাবাহুল্য শিক্ষাক্ষেত্রে যার অবদান অনস্বীকার্য। পরপর ৪ বার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেশ সেরা শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জন সহ শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় উজ্জ্বল আলোকিত দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ।
এই কলেজটিতে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে নির্মিত প্রথম শহিদ মিনার তৈরিতে ইতিহাসের স্মারক বহন করছে যদিও এখনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি লাভ করে নাই , বর্তমানে নানামুখী কাজের তৎপরতায় ১৬০ বর্গফুট জায়গা জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্যের দৃষ্টিবহুল সুবিশাল টেরাকোটা যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘উদয়াস্তে বাংলাদেশ’ যেখানে মুক্তিযুদ্ধের নৈপথ্যৈর কথা, স্বাধীন চেতনা ও বাংলার মানুষের ইতিহাসের রক্তক্ষয়ী গৌরবান্বিত মা বোনদের কথা সহ টেরাকোটায় বসানো হয়েছে রাজশাহী কলেজ প্রতিষ্ঠাকালীন নৈপথৈ শুরু থেকে বর্তমান অবধি যাদের অবদান অনস্বীকার্য তাদের নাম, রাজশাহী কলেজের অধীনে পরিচালিত তৎকালীন অঙ্গ প্রতিষ্ঠানসহ কলেজের শ্রেষ্ঠ অর্জন সমূহ।
প্রত্যহ বিকেলে কলেজ মাঠে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা অপরদিকে গ্রুপ স্টাডিতে পদচারণায় দৃষ্টি আকর্ষিত করবে যে কারও। পরিবেশ যেমন মানুষকে তার সৌন্দর্যে প্রভাবিত করে ঠিক তেমনি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পাবেন কলেজে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের নিকট হতে, গার্ড হতে পরিচ্ছন্ন কর্মী সকলের স্বদিচ্ছা একনিষ্ঠতায় এক অনন্য মাত্রায় এই কলেজ। আসলেই একটি সৌন্দর্য এর পিছনে সকলের প্রাণবন্ত স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বেশি প্রয়োজন।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পাশে কলেজ মিলনায়তনে প্রবেশ পথে দেখা মিলবে শিমুলের রক্তরাঙ্গা ফুলের অপরূপ সৌন্দর্য। কালের পরিক্রমায় ইট-পাথরের রাজত্বে অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ ও ফুল প্রায় বিলুপ্তির পথে। বসন্ত আসার আগেই গাছে গাছে সীমিত আকারে শিমুল ফুল ফুটতে শুরু করেছে। এমন সৌন্দর্যে ছোঁয়ায় গড়ে উঠুক প্রকৃতি নির্ভর সৌন্দর্যময় দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস, সুশিক্ষা নির্ভর এক নতুন প্রজন্ম।
এমন সৌন্দর্যময় কলেজ টিতে গুগল লোকাল গাইড কানেক্ট এর এ্যানিভারসারি (8th Connect anniversary) উৎযাপনে সকলের উপস্থিতি আরও সুদৃঢ় উচ্ছসিত করেছে। যেখানে আমি প্রতিনিয়ত নতুন নতুন মানুষের সংস্পর্শে আসছি, নতুন কিছু শিখছি, শুধু তাই নয় আমাদের নতুন ইভেন্টে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে ভলান্টিয়ার এর সংখ্যা।
জন্মদিন মানেই বিশেষ স্পেশাল মুহূর্ত, আর সেটা যদি হয় বিশ্বব্যাপি ভাতৃত্ব বন্ধনের সেতুবন্ধন, আর এমন একটি প্লাটফর্ম হচ্ছে গুগল লোকাল গাইড কানেক্ট ফোরাম। এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যে, সংস্কৃতি, শিক্ষা সহ হাসি গল্প আড্ডা উঠে আসে, যা জানতে সাহায্য করে নিজেদের। সত্যি ই দারুণ ব্যাপার। Connect 8th anniversary তে শুভেচ্ছা, স্যালুট জানাই সকল ভলান্টিয়ারদেরকে। ধন্যবাদ।