#চিমনি #Chimeni
চিমনি গ্রাম কার্শিয়ং থেকে 8 কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এই গ্রামের নামের পিছনে একটা ইতিহাস আছে। আসলে ব্রিটিশরা একটি চিমনি, যা 23 ফুট উঁচু, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় নির্মাণ করেছিলেন। ব্রিটিশ অফিসার ও জওয়ানদের যুদ্ধের সময় প্রতিবেশী গ্রামগুলোতে পায়ে হেঁটে অনেক ঘুরতে হয়েছে। তাই তারা গ্রামে একটা চিমনির বানিয়ে নেন, যার নিচে ছায়ার বসে তারা বিশ্রাম নিতে পারবেন। এর পর থেকে এই গ্রামটি চিমনি গ্রাম হিসাবে পরিচিত হতে থাকে।
এখান থেকে তিস্তা ও মহানন্দা নদীর উপত্যকা সুন্দর ভাবে দৃশ্য। সমগ্ৰ গ্রাম পাইন গাছে ঘেরা। অতি সুন্দর পরিবেশ। নীল আকাশ।
আকাশ পরিষ্কার থাকলে উত্তর দিকে তুষারাবৃত কান্চনজঙ্ঘার মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখা যায়। এই গ্রাম থেকে জ্যোৎস্মারাতে গোটা উপত্যকার ঐন্দ্রজালিক দৃশ্য দেখা সত্যিই আশ্চর্যজনক। এখানে পর্যটকদের ভিড় অত্যন্ত কম। দুটো দিন নিরিবিলিতে বিশ্রাম নেবার জন্য সত্যিই উপযুক্ত।
জৈব চাষ এই অঞ্চলের কৃষির মূল ভিত্তি। তাজা শাকসবজি স্থানীয় শহর ও শিলিগুড়িতে সরবরাহ করে।
চিমনি গ্রামে পায়ে পায়ে হাটার মজাই আলাদা। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করুন।। গ্ৰামবাসীদের অকৃত্রিম ভাল ব্যাবহার ও আতিথেয়তা আপনাকে সত্যি সত্যিই মুগ্ধ করবে।আপনি বন ও চা বাগানের অতুলনীয় দৃশ্য হাটার পথে দেখতে পাবেন। চিমনি থেকে মহানন্দা জলপ্রপাতের দিকে ট্রেকও করতে পারেন।
গুনগুন করে গান গাইতে গাইতে ঘুরে বেড়াতে পারেন পাইন গাছের জঙ্গলে। অথবা নিছকই সবুজ উপত্যকার ঢালে বসে মিঠে রোদ গায়ে লাগিয়ে নীল দীগন্তের দিকে তাকিয়ে কান্ঞনজঙ্ঘার গায়ে সাদা মেঘের উড়াউড়ি প্রাণভরে উপলব্ধি করতে পারেন। গ্ৰামের নিষ্পাপ শিশুদের স্বর্গীয় হাসি আপনাকে অন্য জগতে নিয়ে যাবে। গ্ৰামের পথে চড়াই-উৎরাই ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে চোখে পরবে রঙবেরঙের পাখি আর নানান প্রজাতির ফুল।
কিভাবে চিমনি পৌঁছাবেন:
চিমনি নিউ জলপাইগুড়ি থেকে 53 কিলোমিটার দূরে এবং কার্শিয়ং থেকে 8 কিলোমিটার দূরে। আপনি নিউ জলপাইগুড়ি বা শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিংগামী যে কোন গাড়ী করে কার্শিয়ং পৌঁছানোর পর, কার্শিয়ং থেকে চিমনি যাবার জন্য একটা স্থানীয় ট্যাক্সি ধরতে পারেন।
থাকার জন্য:
সকালে শিলিগুড়ি থেকে রওনা হয়ে চিমনি ঘুরে সন্ধ্যায় ফিরে আসতে পারেন অনায়াসে। চিমনি পৌঁছেই চটপট দুপুরের খাবারের অর্ডার দিন -হোম স্টেতে। তিনটে হোমস্টে আছে। সুস্বাদু খাবার। গ্ৰামের পথে ঘুরতে ঘুরতে রান্না হয়ে যাবে, ফিরে এসে গরম গরম খেয়ে নিন।
রাত কাটাতে চাইলে হোমস্টের দরজা পর্যটকদের জন্য সর্বদা খোলা। সুন্দর আতিথেয়তা। চিমনির মায়াময় রাতের পরিবেশ আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে আশা রাখি।