An Unforgettable Adventure to Sajek Valley & Khagrachari

যে যাই বলুক না কেন, বাংলাদেশের সবথেকে সুন্দর জায়গাগুলোর মধ্যে সাজেক হচ্ছে একটি অন্যতম জায়গা। যদিও আমাদের এখনো আরো অনেক জায়গা ঘুরে দেখা বাকি। মেঘের আবাসস্থল বা মেঘের রাজ্য বলা হয়ে থাকে সাজেক ভ্যালিকে। ভোরে সুর্যদয়ের সাথে সাথে মেঘের ভেলার যে খেলা দেখা যায় তা আপনাকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। আকাশ যদি মেঘলা হয় তাহলে তো সোনায় সোহাগা, মনে হবে আপনি মেঘের গালিচায় ভাসছেন। সাজেকে যখন আপনি অবস্থান করবেন তখন আপনি সমুদ্র পৃষ্ট থেকে ১৮০০ ফুট উপড়ে রয়েছেন। খাগড়াছড়ি শহর থেকে চান্দের গাড়িতে করে সাজেক আসার পথে প্রাকৃতিক পরিবেশ, উচু নিচু পাহাড়ের ভাজ, দূর পাহাড়ের সারি এসব নৈস্বর্গিক দৃশ্য সারা জীবন মনে রাখার মত।

১ম দিন

আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা থেকে। রাত ১১টায় বাসে যাত্রা শুরু করে ভোরে খাগড়াছড়ি শহরে এসে পৌছাই, সেখানে হোটেলে উঠে ফ্রেশ হয়ে হালকা একটু রেস্ট নিয়ে নাস্তা করতে চলে আসি রেস্টুরেন্টে। তারপর সকাল ৯টার দিকে আমাদের পুর্ব নির্ধারিত চান্দের গাড়ি এসে হাজির, ব্যাগ উঠিয়ে চড়ে বসি গাড়িতে। তিন ঘন্টা আঁকা-বাকা উচু-নিচু পাহাড়ি পথ পেড়িয়ে বেলা ১২ টার দিকে আমরা চলে আসি আমাদের মূল গন্থব্যস্থল সাজেক ভ্যালিতে। কটেজে উঠে ফ্রেস হয়ে রেষ্ট নিয়ে লাঞ্চ করার জন্য চলে যাই চিলেকোঠা রেষ্টুরেন্টে, সেখানে সাদা ভাতের সাথে ব্যাম্বু চিকেন, সবজি, ডাল আর স্পেশাল হলুদ ফুলের সালাদ দিয়ে ভুড়িভোজ করি।

সাজেক ভ্যালির সবচেয়ে ভালো অনুভুতি হচ্ছে সেখানের রাস্তায় হেটে হেটে চারপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশ অবলোকন করা, আমাদের সময় ছিলো একদম মাপা মাপা, তাই একটা মুহুর্ত মিস করতে চাইনি, দুপুরের খাবারের পর হেটে হেটে চলে গেলাম স্টোন গার্ডেনে। তখন ঠিক মধ্য দুপুর, রোদের ত্যাজ নয় যেন আগুন ঝরে পরছে সাজেক ভ্যালির উপরে। তাও সেখানে গাছের ছায়ায় কিছুক্ষন বসে দুজন একটা ভালো সময় পার করেছি।

কংলাক পাহাড়ে

বিকেলের দিকে আমাদের ট্যুর গাইড ভাইয়েরা আবার গাড়ি নিয়ে চলে আসলো, কংলাক পাহাড়ে যাবার জন্য। উল্ল্যেখ্য, সাজেক থেকে কংলাক পাহাড়ের দূরত্ব ৩ কিলোমিটার, ইচ্ছে করলে হেটেও যাওয়া যায়, তবে সময়, এনার্জি বাচানো এবং গ্রুপের সাথে থাকার জন্য গাড়িতেই যাওয়া ভালো। কংলাক পাহাড়ে পুরোটাই খাড়া পাহাড়ের খাজ বেয়ে বেয়ে উঠতে হয়। এই পাহাড় বেয়ে উঠার কষ্টটা নিমিষেই চলে যায় যখন উপড় থেকে নীল পাহাড়ের সাড়ি আর সাদা মেঘের উড়ে যাওয়ার মনোমুগদ্ধকর দৃশ্য দেখি। মৃদু বাতাস এসে গায়ে এক প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে যায়। যদিও অনেক অনেক পর্যটক ছিলো তখন সেখানে। আমরা সুর্যাস্ত পর্যন্ত সেখানে ছিলাম। দূর পাহাড়ের গা ঘেষে সুর্য ডুবার অন্তিম মুহুর্তটা ছিলো অসাধারণ। আমাদের গাইড রাজ ভাই কংলাকের চুড়ায় পেয়াজ মরিচ দিয়ে তরতাজা জাম্বুরা ভর্তা খাওয়ালো, ভর্তাটার স্বাদ এখনো মুখে লেগে রয়েছে। অনিচ্ছা সত্বেও নেমে আসতে হলো আমাদের। ইচ্ছে করছিল চিরদিন থেকে যাই এই কংলাক চূড়ায়।

রাতের সাজেক ভ্যালি

অন্ধকার হবার পুর্বেই কংলাকের চুড়া থেকে নেমে আবারো সাজেক চলে আসি, তখন সন্ধ্যা নেমে গেছে সাজেকে, এ আরেক সৌন্দর্য্য মেলে ধরেছে সাজেক ভ্যালি। চার পাশে গান, আড্ডা, গিটারের টুং টাং, রেষ্টুরেন্টের বাড়ান্দায় বারবিকিউ এর আয়োজন, কেউ আবার আনমনে হাটছে চারপাশে। আমরা দুজন হেটে হেটে টুক করে ডুকে গেলাম চিম্বাল নামক একটা রেস্টুরেন্টে। যার বাড়ান্দায় তখন চলছে লাইভ গানের আসর, কফি খেতে খেতে একটা ভালো সময় পার করে দিলাম। রাতে ডিনারের জন্য আবার সেই চিলেকোটা রেস্টুরেন্টে, আমাদের রাতের আয়োজন ছিলো বারবিকিউ। সবাই একসাথে গল্প করতে করতে রাতের খাবারের ইতি টানলাম। এই ট্যুর গ্রুপে সবাই ছিলো আমাদের অপরিচিত। কিন্তু মজার বিষয় হলো কাউকেই অপরিচিত মনে হয়নি, এমন কি আমাদের গ্রুপ ম্যানেজম্যান্ট এর তিনজন ভ্রমণ গাইড ভাইও ছিলো অনেক আন্তরিক আর বন্ধুসুলভ। রাতে খাবার পরে আর বেশি হাটা হাটি করা যাবেনা। শরীর অনেক ক্লান্ত। আবার ২য় দিন ভোরে উঠে হ্যালিপ্যাডে সুর্য্যোদয় দেখতে হবে। ওই সুর্য্যদয়টাই সাজেকের প্রধান আকর্ষন। মন চেয়েছিলো সারারাত সাজেকে রাস্তায় হাটা হাটি করে কাঠিয়ে দেই, পাহাড়ের চূড়ায় এরকম জ্যোৎস্না বিলানো রাত আবার কবে পাবো জানিনা। মন বাহিরে টানলেও শরীর আর মানতে ছিলনা। কটেজে ফিরে বারান্দায় বসে গল্প করে আর অনেক দূরের তারার মত ঝলমল করতে থাকা শহর দেখি। তার কিছুক্ষণ পর আস্তে আস্তে জমাট বাধা মেঘখন্ড দেখতে দেখতে হিমশীতল এক রাত উপভোগ করলাম। কিন্তু ঘুমটা ভিষণ দরকার ছিল, তাই বেলকনির দরজা খোলা রেখেই কম্বল মুড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।

২য় দিন

সাজেকে সুবেহ সাদিক, আমাদের ২য় দিন, ভোর ৫ টায় উঠে ফ্রেশ হয়েই হ্যালিপ্যাডের উদ্দেশ্যে হাটা শুরু করি। যদিও আরামে ঘুম ছাড়তে ছিলনা। আমরা যখন বের হই, সাজেকের রাস্তায় শুনশান নীরবতা। তখনো কেউ জাগেনাই। আমাদের গ্রুপের এক দম্পতিকে বলে রেখেছিলাম। আমরা হাটা শুরু করার পরে পেছন থেকে উনারা ডাক দেয়। ভোরে এখানে অন্যরকম সৌন্দর্য্য, চারপাশের স্নিগ্ধ পরিবেশে আমরা শুধুই মুগ্ধ হই। কথা বলতে বলতে চলে আসি হ্যালিপ্যাডে, ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পর্যটিকদের আনাগোনা। পুর্বদিকে তখন মেঘের গালিচায় ঢেকে গিয়েছে সমস্ত পাহাড়, বহু দূরের পাহাড়ের সাড়িগুলো এক একটা দেয়ালের মত দাঁড়িয়ে আছে, তার ফাক ফোকর দিয়ে আস্তে আস্তে উকি দিচ্ছে একটা সোনালী সুর্য্য। উড়ে যাওয়া সাদা তুলোর মত নরম মেঘ আমাদের চোখে মুগ্ধতার চিহ্ন এঁকে দিয়ে যাচ্ছে বার বার। এরকম একটি সুন্দর ভোর কখনোই এই ইট কাঠ আর কংক্রিটের শহরে মুল্য দিয়েও পাওয়া যাবেনা। সাজেকে মেঘ দেখে যা বুঝলাম, পুর্ব দিকে বেশি মেঘের আনাগোনা হয়। পশ্চিমে এতো একটা দেখা পাইনি। নাকি ওই দিনগুলোতে আবহাওয়া এরকমই ছিল ঠিক জানিনা। তবে আপনি যদি যান তাহলে অবশ্যই পুর্ব দিকের কটেজ নিবেন। তাহলে কটেজের বাড়ান্দায় বসে বসে উপভোগ করতে পারবেন। আর ছবি তোলার জন্য একটা ভালো দৃশ্য পাবেন।

আদিবাসী পল্লী বা লুসাই গ্রাম

হ্যালিপ্যাডে সুর্যোদয় আর মেঘের খেলা ইতি টেনে আমরা চলে আসি সাজেকের ঐতিহ্যবাহী আদিবাসী পল্লী, লুসাই গ্রামে। উল্ল্যেখ্য, সাজেক ভ্যালি পুরোটাই আলমোষ্ট দেড়/দুই কিলোমিটারের ভেতরে, এবং একই সাড়িতে সব, হ্যালিপ্যাড, লুসাই গ্রাম, রুইলুই পাড়া, স্টোন গার্ডেন, মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট সব হেটে হেটেই ঘুরে দেখা যায়। লুসাই গ্রামে, আদিবাসিদের থাকার ঘর, মন্দির, বাগান, উন্মুক্ত মঞ্চ, দোকানদার ছাড়া দোকান, ইতিহাস ঐতিহ্য সম্পর্কিত অনেক কিছুই রয়েছে। সেখানে টাকার বিনিময়ে লুসাইদের ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে ফটোশ্যুট করা যায়। আমরা এদিক ওদিক ঘুরে বাগানের পেয়ারা গাছ থেকে পেয়ারা পেরে খেলাম সবাই। ছোট ছোট পাহাড়ি পেয়ারা, যেমন ঘ্রাণ তেমন সুস্বাদু।

সকাল ৮ টার দিকে আবারো সেই চিলেকোটা রেষ্টুরেন্ট, আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো গরম গরম ভুনা খিচুরী সাথে ডিম, আর সেই হলুদ ফুলের সালাদ। হেটে হেটে ক্লান্ত হয়ে অনেক ক্ষুধার্ত ছিলাম। ফ্রেশ হয়ে বসে পরি সবাই। অনেক তৃপ্তি সহকারে ভুড়িভোজ শেষ করলাম। সকালে চিলেকোটা রেষ্টুরেন্টের সামনে আদিবাসীদের বাজার বসে, পাহাড়ি পেপে, কলা, সবজি, কাচা মরিচ, আদা হলুদ, হলুদ ফুল সব পাওয়া যায় সেখানে। অনেকে কিনে নিয়ে যায় শহরে। সাজেক ভ্যালিকে আমাদের বিদায় জানানোর সময় ঘনিয়ে আসছে। মন মানছে না, আরো কিছু সময় যদি থাকা যেতো। কিন্তু কিছু করার নেই, আমাদের সময় ছিলো নির্ধারিত। সকাল ৯টা - সাড়ে ৯ টার দিকে সাজেক ত্যাগ করতে হবে। খাগড়াছড়িতে আরো দুই-তিনটা ভ্রমণ স্পট দেখতে হবে আজই। তাই অল্প কিছু সময় রেষ্ট নিয়ে সাজেক ভ্যালিকে এবারের মত বিদায় জানাই।

দুপুরে খাগড়াছড়ি শহরে

আবারো সেই আঁকা বাকা বন্ধুর পথ পেড়িয়ে, দিনের ঠিক মধ্যভাগে আমরা খাগড়াছড়ি শহরে এসে উপস্থিত হই। দিনের বাকি সময়টুকো যেভাবে কাটানোর পরিকল্পনা হয়েছিলো – খাগড়াছড়ির অনেক পুরাতন, ঐতিহ্যবাহী “সিস্টেম” রেষ্টুরেন্টে দুপুরের খাবার, তারপর নয়নাভিরাম রিসাং ঝর্ণা দর্শন, তারপর আলুটিলা গুহা অভিযান, সবশেষে খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার পার্ক বা ডিসি পার্ক, যেখানে রয়েছে সুন্দর একটি ঝুলন্ত ব্রীজ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, আমরা চলে আসলাম লাঞ্চ করতে সিস্টেম রেষ্টুরেন্টে। ঐতিহ্যবাহী রেষ্টুরেন্ট কিন্তু নামটা “সিস্টেম” কেনো হলো বুঝলামনা। রেষ্টুরেন্টে প্রবেশ করতেই মনে হলো গ্রামের অনেক পুরাতন কোন কাঠের ঘরে প্রবেশ করেছি। পুরো গ্রামের ঘরের মত পরিবেশ, ঝুড়ি, কুলা, লাঙ্গল, হাতপাখা, আদিবাসীদের জীবন যাপনের হরেক উপকরন দিয়ে সাজানো হয়েছে রেষ্টুরেন্ট এর ভেতরের ইন্টিরিওর। সমস্যা একটাই, উপড়ে টিনের চাউনী ছিলো বলে অনেক গরম ছিলো। সাদা ভাত, ভর্তা, হাসের মাংস, বাঁশের ডাল ইত্যাদি ছিলো খাবার তালিকায়। খাবারের মান ভালো ছিলো, আমি অনেক তৃপ্তি সহকারে খেয়েছি। রেষ্ট রুমে ছিলো পান-সুপারীর আয়োজন। সবার আগে গিয়েছিলাম বলে সবার আগেই ভোজ শেষ হয় আমাদের। আমরা যখন রেষ্টুরেন্টের রেষ্ট রুমে বসে রেষ্ট নিচ্ছি ততক্ষনে পর্যটকের ভিড়ে সেটিতে বিয়ে বাড়ির মত ভির লেগে যায়।

রিসাং ঝর্ণার মায়ায়

খাবার পর্ব শেষ হতে কিঞ্চিত দেড়ি হয়েছিলো, তাই রিসাং ঝর্ণায় যেতে দেড়ি হয়ে যায়। ঝর্ণাতে যাবার পথে আমরা চান্দের গাড়ির ছাদে বসে চার পাশের দৃশ্য উপভোগ করতে করতে যাই। পাহাড়ের উপড় থেকে অনেকটা ঢালু পথ বেয়ে নেমে, তারপর আবার অনেকটা সিড়ি বেয়ে নেমে ঝর্ণার কাছে যেতে হয়। আবার এখানে নামা এবং উঠার জন্য মোটর সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়। যদি এক্সিডেন্টের ঝুকি রয়েছে অনেকটা। খাগড়াছড়ি জেলা প্রসাশন থেকে নিষেদ রয়েছে এখানে মোটর সাইকেল চালনোর। আমরা হেটেই নামি, রাস্তা ছিলো ইট সোলিং করা তাই নামার সময় এতো একটা কষ্ট হয়নি। ঝর্ণার ছলছল জলের মোহনীয় শব্দে মুখরিত চারপাশ। কাছে গিয়ে কিছু ছবি তোললাম। কিন্তু ঝর্ণাতে ভিজার জন্য বাড়তি কাপড় নেইনি বলে একটা আক্ষেপ নিয়ে ফিরে আসতে হলো। উঠার সময় অনেকটা হাফিয়ে যাই। সিড়ি শেষ হয়েছে যেখানে সেখানে কচি ডাব আর লেবুর শরবৎ পাওয়া যায়। সিড়ির বিরতিতে ওই জিনিস খেতে ভুলবেন না। একদম কলিজা টান্ডা হয়ে যাবে। উঠার সময় আমাদের গ্রুপের একজন বাচ্চা মোটর সাইকেল দিয়ে উঠতে গিয়ে আহত হয়। অনেক খারাপ লাগে এক্সিডেন্ট করেছে শুনে। তাই যত সম্ভব হেটে উঠা-নামা করা ভালো।

আলুটিলা গুহা অভিযান

রিসাং ঝর্ণার অদূরেই রয়েছে আলুটিলা গুহা, আমাদের গাড়ি আরো কিছুক্ষন ড্রাইভ করে নিয়ে আসলো সেখানে। জায়গাটার নাম আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র। গুহার মুখের পাশেই একটা খোলামেলা ভিউ পয়েন্ট রয়েছে, সেখানে গ্রুপের সবাই মিলে গ্রুপ ফটোশেশন করা হলো। তারপর চলে গেলাম গুহায় প্রবেশ করতে। অন্ধকার স্যাতস্যাতে পাথুরে গুহার এক দিক দিয়ে প্রবেশ করে অন্য দিক দিয়ে বাহির হতে হয়। অনেক বেশি মানুষ থাকার কারনে তেমন একটা এডভাঞ্চার ফিল পাইনি। তবে এতো একটা খারাপ লাগেনাই। আগে মানুষ গুহাতে প্রবেশ করতে মশাল নিয়ে যেতো। কিন্তু এখন সবার মোবাইল ফোনের ফ্লাস লাইট রয়েছে। ছোটবেলা বই পুস্তকে পড়েছি গুহার গল্প কাহিনী। এবার বাস্তবে দেখা হলো। গুহা থেকে বের হবার পথটা ছিলো অনেক পিচ্ছিল আর খাড়া। একবার পা পিছলে গেলে নিশ্চিত আহত। তাই অনেক সাবধানে আমরা আলুটিলা গুহা থেকে বের হয়ে আবার প্রবেশ গাড়ির কাছে চলে আসি। ততক্ষনে প্রায় সন্ধ্যার কাছাকাছি।

পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের সর্বশেষ দর্শনীয় জায়গা ছিলো হর্টিকালচার পার্ক, এটিকে ডিসি পার্কও বলা হয়ে থাকে। আমাদের গাড়ি এখানে আসতে আসতে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে। তাই খুব বেশি সময় থাকিনি। তবে অন্ধকারেই যতদূর হেটে দেখা যায়৷ পার্কের ভেতরে রয়েছে একটা দৃষ্টিনন্দন লেক। তার উপড়ে রয়েছে একটি ঝুলন্ত ব্রীজ। এই ব্রীজটি পর্যটকরা দেখতে আসে। আমরা ব্রীজটির এপার থেকে ওপাড়ে গিয়ে লেকের পাড়ে একটু হাটাহাটি করি। লেকে যেতে একটা রেস্টুরেন্টের এর খোলা বারান্দায় শিল্পিরা গান বাজনা করতে দেখবেন গিটার হাতে। গান শেষ হলে কিছু বখশিশ দিতে হয়। লেকে বোটের ব্যবস্থাও রয়েছে। এবং তার পাশেই উপজাতিদের দোকানপাট। সময় কম থাকায় সেখান থেকে বের হয়ে চলে আসি খাগড়াছড়ি শহরে আমাদের সেই পুর্ব নির্ধারিত হোটেলে। রুমে এসে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নেই। রাত ১০ টায় আমাদের ঢাকার রিটার্ন বাস। তাই ঘন্টাখানেকের জন্য বিশ্রাম নেই। রাত ৯ টায় সব কিছু গুছিয়ে হোটেল থেকে বের হয়ে চলে আসি রাতের খাবার খেতে। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাসে উঠি। বিপুলা এই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতেই অনেক দর্শনীয় জায়গা রয়েছে। সময় সল্পতা হেতু অনেক কিছুই দেখা হয়নাই। তাই আপাতত এবারের মত বিদায় নিলাম পাহাড়, অরণ্যে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপার লীলাভুমি খাগড়াছড়ি থেকে।

সাজেকে যাবার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে কোন গ্রুপের সাথে এড হয়ে যাওয়া, এতে ঝামেলা কম এবং সময় এবং টাকা দুটাই সাশ্রয় হবে। ঢাকায় অনেক ট্যুর অপারেটর রয়েছে যারা সাজেকের অনেক প্রকার ট্যুর প্যাকেজ অফার করে। আপনি আপনার সুবিধামত প্রয়োজন মত নিয়ে ওদের সাথে যেতে পারবেন। ৩৫০০ থেকে ৫৫০০ টাকার মধ্যে জন প্রতি ঘুরে আসা যায়। প্যাকেজে গেলে এতে আপনার যাতায়াত, কটেজ, খাবার নিয়ে কোন টেনশন করতে হবেনা।

যেখানেই যাবেন পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবেন না, ময়লা আবর্জনা নির্ধারিত স্থানে ফেলবেন। স্থানীয় জনগোষ্টিকে সম্মান করবেন। ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান সময় দিয়ে এই লেখাটুকো পড়ার জন্য। হ্যাপি ট্রাভেলিং।

72 Likes

খুবই সুন্দর পোস্ট ভাই। ধন্যবাদ এখানে শেয়ার করার জন্য। ছবিগুলাও অনেক সুন্দর হয়েছে। কিন্ত খরচের হিসাব টা উল্লেখ করলে অনেকে উপকৃত হত।

2 Likes

ধন্যবাদ ভাই। @Papel_Mahammud আমরা একটা গ্রুপের সাথে প্যাকেজ ট্যুরে গিয়েছিলাম। দেখি সময় পেলে এড করে দেব

2 Likes

Excellent travel post. @AtiqulHoque thanks for sharing your experience.

3 Likes

Thanks for your nice feedback bro. @MehadeHasan

3 Likes

আপনার পোষ্ট দেখে, আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছে সাজেক যাওয়ার। আশা করি আগামী শীতে সাজেক ভ্যালি যাবো।

আপনাকে ধন্যবাদ @AtiqulHoque এত সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য।

1 Like

@GaziSalauddinbd শীতেকালের থেকে বর্ষাকালে মেঘের আনাগোনা বেশি দেখায় যায়। শীতে পাহাড়গুলো রুক্ষ থাকে। তবে সাজেক একেক সিজনে একেক রকম সুন্দর। এমন সুন্দর জায়গায় সবার দুই একবার যাওয়া উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামতের জন্য।

1 Like

@AtiqulHoque অ সাধারন লেখা। আমি দেশে আসলে যাওয়ার প্ল্যান আছে। গতবছর দেশে থাকার সময় যেতে চেয়েছিলাম, করোনার জন্য হয়ে উঠে নি। এইবার আসলে মাস্ট ইনশাআল্লাহ।

2 Likes

@PavelSarwar জী ভাইয়া, জায়গাটা অনেক সুন্দর, একবার হলেও যাওয়া উচিত। বিশেষ করে বর্ষা কালে।

This content has been removed.

2 Likes

Thank you so much Mr. @user_not_found I am very glad to know that you like the story of my travel experience. Thank you again for spending your precious time to reading my article. I have some more travel stories, you can read them if you have time.

Detailed post with awesome pictures and I must say this is an excellent post and this should be an example of an ideal post, so thank you @AtiqulHoque for the great great post.

1 Like

@TravelerProdipta Thank you for your nice feedback. I hope to be able to write more posts in the future with such ideals and details if you encourage.

1 Like