A day in the tomato garden

Caption: বাগান থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য স্তুপ করে রাখা টমেটো।

সারাবিশ্বেই সমাদৃত টমেটো একটি সুস্বাদু সবজি হিসেবেই পরিচিত । এটি কাঁচা, পাকা এবং রান্না করে খাওয়া যায়। এছাড়া টমেটো সস, কেচাপ, চাটনি ও জুস হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। এখন আমাদের দেশে টমেটো সারা বছর চাষ হলেও এটি মূলত শীতকালীন সবজি।

Caption: সংগ্রহ এর পর বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আমি মুলত প্রতি শুক্রবার ছুটির দিনে নিজ জেলায় এদিক সেদিক ঘুরতে বের হই তারই ধারাবাহিকতায় এবারে গিয়েছিলাম মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ি উপজেলার আবদুল্লাহ পুর চরাঞ্চল এলাকাতে। এখানে টমেটো র পাশাপাশি ধান,গম,ভুট্রা, শশা,তরমুজ এর পাশাপাশি বিভিন্ন শীতকালীন সবজি র চাষাবাদ করা হয়।

Caption: টমেটো বাগানের একটি কোলাজ ছবি।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বেশ কিছু টমেটোর জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলো মৌসুম ছাড়াও ফলে। এছাড়া কিছু হাইব্রিড জাত আমাদের দেশে আসাতে সারা বছরই এখন টমেটো হচ্ছে। তবে দেশেও বেশ কিছু আধুনিক উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো উদ্ভাবন করা হয়েছে, যেগুলো ভালো ফলন দিচ্ছে। সব মিলিয়ে এ দেশে এখন পঞ্চাশটিরও বেশি জাতের টমেটো চাষ হচ্ছে।

Caption: কাচাপাকা টমেটোর সাথে একটা ছবি।

Caption: গাছে থরে থরে কাচাপাকা টমেটো।

শীতকালীন টমেটো চাষ করবেন যেভাবে :arrow_lower_left:

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) বেশ কিছু টমেটোর জাত উদ্ভাবন করেছে। এগুলো মৌসুম ছাড়াও ফলে। এছাড়া কিছু হাইব্রিড জাত আমাদের দেশে আসাতে সারা বছরই এখন টমেটো হচ্ছে। তবে দেশেও বেশ কিছু আধুনিক উচ্চফলনশীল জাতের টমেটো উদ্ভাবন করা হয়েছে, যেগুলো ভালো ফলন দিচ্ছে। সব মিলিয়ে এ দেশে এখন পঞ্চাশটিরও বেশি জাতের টমেটো চাষ হচ্ছে।

মৌসুম অনুযায়ী এ দেশে চাষযোগ্য টমেটো জাতসমূহকে মোটামুটিভাবে কয়েকটি ভাগ করা যেতে পারে। যেমন, আগাম জাত। এ জাত শীতকালেই চাষ হয়, তবে আগাম ফলে। আগাম জাতসমূহের বীজ বপন করা হয় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে। আগাম জাতসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, বারি টমেটো-৪, বারি টমেটো-৫, রোমা ভিএফ, রোমারিও, টিপু সুলতান, গ্রেট পেলে, ডেল্টা এফ-১, উন্নয়ন এফ-১, পুষারুবি, নিউ রূপালি এফ-১ ইত্যাদি।

ভরা মৌসুমী জাত। শীতকালে স্বাভাবিক সময়েই এসব জাতের গাছে ফল ধরে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ বুনে অক্টোবর-নভেম্বরে এসব জাতের টমেটোর চারা রোপণ করা হয়। অধিকাংশ জাতই শীতকালে ফলে। এসব জাতের মধ্য থেকে মানিক, রতন, বারি টমেটো-৩, বারি টমেটো-৬, বারি টমেটো-৭, বারি টমেটো-৯, বাহার, মহুয়া ইত্যাদি জাতকে বেছে নেওয়া যেতে পারে।

নাবি শীত মৌসুমী জাত। এসব জাতের বীজ বুনতে হয় জানুয়ারিতে, ফল পাওয়া যায় মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত। বাহার, রোমা ভিএফ, রাজা, সুরক্ষা ইত্যাদি জাত নাবি চাষের জন্য ভালো।

সারা বছর চাষের উপযোগী জাত। বছরের যেকোন সময় টমেটোর বীজ বুনলে চারা ও সেসব চারা রোপণ করলে গাছ হয়, এমনকি সেসব গাছে ফুলও আসে। কিন্তু সব জাতের গাছে ফল ধরে না। এজন্য সারা বছর চাষের উপযোগী জাত যেমন, বারি টমেটো-৬ (চৈতী) চাষ করা যায়। টমেটো চাষ করা হয় চারা তৈরি করে। এজন্য বীজতলায় বীজ বুনে সেখানে চারা তৈরি করে নিতে হয়। টমেটো চাষে সফলতার জন্য কেনা বীজ বা ঘরে রাখা বীজ প্রথমে শোধন করে নিতে হবে। সম্ভব হলে বীজতলায় বোনার আগে অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করে নেয়া উচিত। একবার ফেলার পর বীজতলায় সেসব বীজ না গজালে বা কম গজালে কিংবা গজানো চারা রোগগ্রস্ত হলে ক্ষতি হবে।

বীজের মধ্যে অনেক সময় রোগ-জীবাণু লুকিয়ে থাকে। যেমন, আগাম ধ্বসা বা আর্লি ব্লাইট রোগ, মোজেইক ভাইরাস, ছত্রাকজনিত ঢলে পড়া ইত্যাদি রোগের জীবাণু বীজে থাকতে পারে। মাটিতে ফেলার পর পানি পেয়ে সেসব রোগ-জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে চারা মারা যায়। আবার অনেক সময় বীজতলার মাটিতেও কিছু রোগ-জীবাণু থাকতে পারে। যেমন, চারা ধ্বসা বা ড্যাম্পিং অফ রোগের জীবাণু। এসব রোগ-জীবাণুও চারাকে আক্রমণ করতে পারে। সেজন্য বীজতলার মাটিও শোধন করে নিলে ভালো হয়।

বীজ শোধন করা যেতে পারে কয়েক পদ্ধতিতে। গরম পানিতে ভিজিয়ে বীজ শোধন করা সহজ। ৫০০ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার গরম পানিতে ৩০ মিনিট টমেটোর বীজ ভিজিয়ে রাখলে বীজের গায়ে লেগে থাকা বা ভেতরে থাকা ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক জীবাণু মরে যায়। এরপর ভিজে যাওয়া বীজ তুলে ছায়ায় শুকিয়ে বপন করতে হবে।কিছু গাছ-গাছড়ার রস দিয়েও বীজ শোধন করা যায়। রসুনের রস দিয়ে এ কাজ করা যেতে পারে। এছাড়া ছত্রাকনাশক দিয়েও বীজশোধন করা যায়। আর বীজ তলার মাটি চাষ দিয়ে তাতে জৈব সার মিশিয়ে পলিথিন দিয়ে দুসপ্তাহ ভালো করে ঢেকে রেখে দিলে সূর্যের তাপে মাটিতে থাকা অনেক জীবাণু মরে যায় ও বীজতলার মাটি শোধন হয়ে যায়। সময় না থাকলে বীজতলার মাটির উপরে ৩ ইঞ্চি পুরু করে কাঠের গুঁড়া বিছিয়ে আগুন দিলে সেই তাপেও রোগ জীবাণু নষ্ট হয়।

সরাসরি জমিতে বীজ বুনেও টমেটো চাষ করা যায়। তবে দ্রুত ভালো ফলন পাওয়ার জন্য আলাদাভাবে চারা তৈরি করে সেই চারা মূল জমিতে লাগাতে হবে। এজন্য রোদযুক্ত উঁচু জায়গায় পরিষ্কার করে ভালোভাবে মাটি চাষ দিয়ে বীজতলা তৈরি করতে হবে। চাষের পর মাটি সমতল করে ১ মিটার চওড়া করে বেড বানাতে হবে।

বেড খুব বেশি লম্বা না করে ৩-৫ মিটার করা ভালো। এতে পরিচর্যার সুবিধা হয়। ছিটিয়ে বীজতলায় বীজ বপন করা যায়। ছিটিয়ে বপনের জন্য সাধারণত প্রতি বর্গমিটার বীজতলার জন্য ১০০-১৫০ গ্রাম বীজ লাগে। বীজ থেকে চারা গজাতে ৬-১৪ দিন লাগে। শীতকালীন টমেটো চাষের জন্য বীজ বুনতে হবে কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে। আগাম চাষের জন্য শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে বীজ বুনতে হবে।

জমি ৪-৫ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরা করে নিতে হয়। গ্রীষ্মকালে টমেটো চাষের জন্য ২০-২৫ সেন্টিমিটার উঁচু এবং ২৩০ সেন্টিমিটার চওড়া বেড তৈরি করতে হয়। সেচ দেওয়ার সুবিধার্থে ২টি বেডের মাঝে ৩০ সেন্টিমিটার নালা রাখতে হয়। প্রতিটি বেডে ২ সারি করে ৬০x৪০ সেন্টিমিটার দূরত্বে ২৫-৩০ দিন বয়সের চারা রোপণ করতে হয়।

শীতকালীন টমেটোর জন্য মধ্য কার্তিক থেকে মাঘের প্রথম সপ্তাহ (নভেম্বর থেকে মধ্য জানুয়ারি) পর্যন্ত চারা রোপণ করা যায়। তবে আগাম চাষের জন্য রোপণ সময় এগিয়ে আনতে হবে। আগাম চাষের জন্য ভাদ্র-আশ্বিন মাসে এবং নাবি চাষের ফাল্গুন মাসে এবং গ্রীষ্মকালীন চাষের জন্য জন্য চৈত্র-বৈশাখ মাসে চারা রোপণ করতে হবে।

টমেটো উৎপাদনের জন্য হেক্টর প্রতি নিয়ম মতো সার প্রয়োগ করতে হয়। তবে মাটি পরীক্ষা করে সার দেয়া ভালো।

ইউরিয়া প্রতি শতকে ২ কেজি থেকে ২.৪ কেজি, টিএসপি প্রতি শতকে ১.৬ কেজি থেকে ২ কেজি, এমওপি প্রতি শতকে ০.৮ কেজি থেকে ১.২ কেজি ও গোবর প্রতি শতকে ৩০ কেজি থেকে ৪৫ কেজি প্রয়োগ করতে হবে।

অর্ধেক গোবর সার ও সবটুকু টিএসপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। অবশিষ্ট গোবর চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে প্রয়োগ করতে হবে। ইউরিয়া ও এমওপি সমান দুই কিস্তিতে পার্শ্বকুশী ছাঁটাই এরপর চারা লাগানোর তৃতীয় সপ্তাহে ও পঞ্চম সপ্তাহে রিং পদ্ধতিতে প্রয়োগ করতে হয়। ঘাটতি থাকলে জিপসাম, জিঙ্ক সালফেট, বোরিক এসিড পাউডার এবং ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারও প্রয়োগ করতে হবে।

মরা পাতা ছাঁটাইসহ ‘অ’ আকৃতি বাঁশের খুঁটি টমেটো গাছের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি কাজ। এছাড়া প্রয়োজনে সেচ দেয়াও যেতে পারে। ভাইরাস রোগ দেখা দিলে গাছ তুলে ফেলতে হবে। অন্যান্য রোগ প্রতিকারের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

জাত ও লাগানোর সময়ের উপর নির্ভর করে ২-৪ মাসের মধ্যেই ফসল তোলার সময় হয়। টমেটো পাকা ও কাঁচা উভয়ই অবস্থায়ই তোলা যায়। তবে দূরে পাঠানোর জন্য একেবারে পাকা টমেটো তোলা উচিত নয় এবং পাকানোর জন্য বা টমেটোর ভাল রং আনার জন্য কৃত্রিম হরমোন ব্যবহারও ঠিক নয়। প্রতি হেক্টরে ফলন ২০-৪০ টন।

সূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস

Caption: বিক্রি করতে নিয়ে যাবার জন্য ট্রে তে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

এগুলা মুলত স্থানীয় পাইকারি বাজারে বিক্রি করা হয় বর্তমান কেজিপ্রতি টমেটো র মুল্য ১৫ থেকে ২০৳

Caption: টমেটো বাগানের একটি ফটোগ্রাফি।

টমেটো বাগানের পাশেই চাষ হচ্ছে আলুর খুব সুন্দর একটি ভিউ দেখে ছবি তোলার লোভ সামলাতে পারিনি তাই একটি পোজ নিয়েছি।

আমাদের বাংলাদেশ মুলত কৃষিপ্রধান দেশ কৃষি কৃষক হচ্ছে আমাদের প্রান। দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন ফলমুল শাক সবজি এশিয়া ইউরোপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। এবং দেশের অর্থনীতি তে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

#BDLG #BangladeshLocalguide #Localstories #Localguideconnect #Letsguide

71 Likes

টমেটো কে না পছন্দ করে! অন্য সবার মতই টমেটো আমারও খুব পছন্দের। আপনার এই সুন্দর পোস্টের মাধ্যমে টমেটো এবং টমেটো চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম। আশা করি অনেকেই উপকৃত হবেন। বিশেষ করে যারা বাড়ির উঠোনে বা ছাদে টমেটো চাষ করতে চান।

@MohammadPalash টমেটো নিয়ে তথ্যবহুল এই পোষ্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

6 Likes

ধন্যবাদ প্রিয় @AbdusSattar ভাই

3 Likes

@MohammadPalash শীতকালীন সবার প্রিয় সবজী নিয়ে উৎপাদন, পরিচর্যাসহ বিস্তারীত তথ্যবহুল লেখা. যা সবজী চাষ করতে আগ্রহী ছাদবাগানীদের দরকারী সব তথ্য আছে। ধন্যবাদ ভাই আমার সুন্দর লেখা উপহার দেয়ার জন্য

2 Likes

উৎসাহ প্রদানের জন্য কৃতজ্ঞতা ভাই @Anonymous_b94cf02d9eeadbc2e4ca1e27a5054b05

1 Like

Nice post brother @MohammadPalash

thank you for sharing with us

1 Like

It’s my pleasure @Papel_Mahammud

টমেটো আমার খুবই পছন্দের :heart_eyes:

1 Like

জ্বি ভাই জুয়েল ভাইয়ের কাছে ভালো রেসিপি আছে :yum: @anazizullah

1 Like

@MohammadPalash টমেটো আমার খুব পছন্দের একটা খাবার। আপনার পোস্ট দেখে অনেক ভালো লাগলো।

1 Like

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই @rashedul-alam