বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে আছে প্রচুর নান্দনিক ইসলামিক স্থাপনা। এসব স্থাপনার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মসজিদ। মসজিদ আল্লাহতায়ালার ঘর। পৃথিবীতে মানুষের কল্যাণে যে ঘর নির্মিত হয়েছিল, তা হলো মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা। পৃথিবীতে এখনও মসজিদ নির্মিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। এসব মসজিদ পবিত্র কাবাঘরকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকালে করে কুবা পল্লীতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এটি ইসলামের ইতিহাসে প্রথম মসজিদ। পরবর্তীতে তা মসজিদে কুবা হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে। পরে নবী করিম (সা.) মদিনায় নির্মাণ করেন মসজিদে নববী।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আমলে মসজিদে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়, দৈনন্দিন ইবাদত-বন্দেগি, সাহাবায়ে কেরামকে ইসলামের বিধি-বিধান শিক্ষাদান, বিচার-আচার, সাধারণ মানুষের মধ্যে ইসলামের বাণী প্রচারসহ নানাবিধ ধর্মীয়, সামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও রয়েছে সুলতানি, মোগল ও বাংলাদেশ আমলের মসজিদ ও স্থাপনা। এসব মসজিদের মাঝে বর্গমান সময়ে নির্মিত টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদটিও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
২০১ গম্বুজ মসজিদ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি গম্বুজ এবং দ্বিতীয় উচ্চতম মিনার বিশিষ্ট মসজিদ।এই মসজিদের নকশা করা হয়েছে ২০১টি গম্বুজ ও ৯টি মিনার দিয়ে সজ্জিত একটি পূর্নাঙ্গ মসজিদ কমপ্লেক্স হিসেবে। মসজিদটি এখনো নির্মাণাধীন। ২০১ গম্বুজ মসজিদ বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে অবস্থিত। ২০১৩ সালের জানুয়ারি এই মসজিদ নির্মাণ কাজ শুরু হয়।মসজিদটি মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে। এ কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের মা রিজিয়া খাতুন।মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে আনুমানিক ১০০ কোটি টাকা। ২০১৭ সালে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। নির্মাণ শেষ হলে কাবার ইমাম এসে নামাযের ইমামতি করে মসজিদটি উদ্বোধন করবেন।পৃথিবীর ইতিহাসে কখনো এত সংখ্যক গম্বুজ বিশিষ্ট আর তৈরি হয় নাম ।
অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের ছাদে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি গম্বুজ রয়েছে।এই বড় গম্বুজের চারপাশে ছোট ছোট গম্বুজ আছে ২০০টি।এদের প্রত্যেকের উচ্চতা ১৭ ফুট। মূল মসজিদের চার কোণায় রয়েছে ৪টি মিনার।এদের প্রত্যেকের উচ্চতা ১০১ ফুট। পাশাপশি আরও চারটি মিনার আছে ৮১ ফুট উচ্চতার। সবচেয়ে উঁচু মিনারটি মসজিদের পাশেই অবস্থিত। এর উচ্চতা ৪৫১ ফুট। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।মসজিদের দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত রয়েছে পূর্ণ পবিত্র কোরআন শরিফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালে অঙ্কিত কোরআন শরিফ পড়তে পারবেন। মসজিদের প্রধান দরজা নির্মাণে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান দেওয়ার জন্য মসজিদের সবচেয়ে উঁচু মিনারে বানানো হবে। মসজিদটি সম্পূর্ণ শিতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলেও এতে সহস্রাধিক বৈদ্যুতিক পাখা যুক্ত করা হবে। একটি সুন্দর মসজিদের অবয়ব দেখা যাচ্ছে টাঙ্গাইলে।
© @mratulphotography
Mohammad Ratul
#201_domes_mosque #201_gombuj_mosjid